সরকারের অস্ত্র ছাত্রলীগ : ড. সলিমুল্লাহ খান
সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ছাত্রলীগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। শনিবার রাজধানীর টিসিবি মিলনায়তনে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ক্রসফায়ার দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। সিলেটের শাহজালালের ঘটনায় ছাত্রলীগকে বহিষ্কার করে খুবই লঘু শাস্তি দেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর উইমেন লিডারশিপের নির্বাহী পরিচালক নাসিম ফিরদৌস বলেন, সরকার এখন মধ্যবর্তী নির্বাচন দিলে দুই পক্ষকেই থাকতে হবে। তবে নির্বাচন হলেই যে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে তা নিশ্চিত না। আর গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন বাধ্যতামূলক না বলেও মত দেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ চায় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন। তবে জরিপের যৌক্তিকতা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে বক্তব্য রয়েছে তার সঙ্গে আমরা একমত।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, জনমতের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না। তবে সরকার বুদ্ধিমান হলে আগাম নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। তবে সেটা কোন পর্যায়ে গেলে নির্বাচন দেবে সেটা দেখার বিষয়। আর জনসমর্থন থাকলে সরকার নির্বাচন দেবে কেন? এ জরিপের ভিত্তিতে সরকার নির্বাচন দেবে না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে সরকারের যথেষ্ঠ পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে হান্নান শাহ বলেন, যথাযথ কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। ক্রসফায়ারে কিছু ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছে যা অনৈতিক। এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই। প্রধানমন্ত্রী তো অনেক কথায় বলেন। আমি অপেক্ষায় আছি তার কথামতো ১০ টাকা কেজি চাল কেনার জন্য।
তবে এইচ টি ইমাম বলেন, ছাত্রলীগকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ অনেক ভালো কাজও করে, এদেশে ছাত্রলীগের অনেক অবদানও রয়েছে।
নাসিম ফিরদৌস বলেন, শিক্ষাঙ্গণে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কী ধরনের রাজনীতি করা যাবে এর জন্য নীতি প্রণয়ন করতে হবে। হান্নান শাহ বলেন, ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদলের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। ছাত্রলীগ ধর্ষণে সেঞ্চুরি পালন করেছে, যা আর কেউ করতে পারেনি।
ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাঠানো প্রায় বন্ধ হওয়ার বিষয়টি কি প্রকারন্তরে স্থানীয়ভাবে গবাদী পশু উন্নয়নের একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে নাসিম ফিরদৌস বলেন, অবশ্যই এটি একটি সুযোগ বটে। আর এতে শুধু যে গবাদি পশুরই উন্নয়ন হবে তা নয়, সেই সঙ্গে দুধের উৎপাদনও বাড়বে, যা পুষ্টিমান বাড়াবে।
হান্নান শাহ বলেন, আগামী দশ-পনের বছরে আমরা এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। তাই বাইরে থেকে আসতেই হবে। এইচ টি ইমাম বলেন, গরুর পরিমাণ প্রচুর বেড়েছে। দুধ উৎপাদনও বাড়বে। এছাড়া কোনো সংকটও হবে না। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন।
এফএইচ/এএইচ/বিএ