২০ মে বিআরটিসির ঈদ টিকিট বিক্রি শুরু
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) আগামী ২০ মে থেকে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করবে। প্রতিবারের মতো এবারও বিআরটিসি যাত্রী সাধারণের আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আগামী ২৭ মে থেকে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। বিআরটিসিরি চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া আজ (শুক্রবার) একথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আগামী ২০ মে থেকে বিআরটিসির সংশ্লিষ্ট ডিপো হতে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রয় শুরু হবে এবং ১০ জুন পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের এই বাস চলাচল করবে। রাজধানীর মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, কল্যাণপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর বাস, যাত্রাবাড়ী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো (ফুলবাড়িয়াস্থ সিবিএস-২) হতে আগাম টিকেট বিক্রি করা হবে।’
বিআরটিসিরি চেয়ারম্যান আরও জানান, সরকারের আমদানীকৃত নতুন দেড়শ বাসসহ মোট এক হাজার ৮৯টি বাস ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে ৬৪৯টি বাস ঢাকা থেকে এবং ৩৯০টি ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চলাচল করবে। কোথাও কোনো বাস বিকল হলে বা দুর্ঘটনায় পড়লে সেখানে সরবরাহ করার জন্য ৫০টি বাস সংস্থায় রিজার্ভ থাকবে।
বিআরটিসির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মনিরুজ্জামান বাবু জানান, মতিঝিল বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকবে ঢাকা থেকে নাগরপুর, দাউদকান্দি, বাজিতপুর, খুলনা, দিনাজপুর, নেত্রকোনা রুট। কল্যাণপুর বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকছে রংপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, নাগরপুর, গোবিন্দগঞ্জ, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর রুট। গাবতলী ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকছে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও রুট। জোয়ারসাহারা বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকবে বিশ্বরোড-পাঁচদোনা, রংপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও বগুড়া রুট। মিরপুর বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকছে রংপুর, কুষ্টিয়া, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও নওগাঁ রুট। মোহাম্মদপুর বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে রংপুর রুট।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও গাজীপুর বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকছে বিশ্বরোড-পাঁচদোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও রুট। যাত্রাবাড়ী বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ঢাকা থেকে গৌরিপুর, টঙ্গী-মাওয়া, চট্টগ্রাম, সিলেট রুট। নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-মেঘনা উপজেলা, বিশ্বরোড-পাঁচদোনা রুট। অন্যদিকে কুমিল্লা বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকবে ঢাকা-কুমিল্লা, ঢাকা-বরুড়া রুট। নরসিংদী বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ঢাকা-নরসিংদী ও ঢাকা-ভৈরব রুট। সিলেট বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণে থাকছে সিলেট-তারাকান্দা রুট।
যাত্রী সাধারণকে বিআরটিসির ঈদ স্পেশাল সার্ভিস গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে বিআরটিসি চেয়ারম্যান বলেন, ঘরমুখো যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে আগামী ৩ জুন হতে ঢাকার বিভিন্ন ডিপো বা টার্মিনালে জরুরি সার্ভিস দেয়ার জন্য ৫০টি বাস রিজার্ভ থাকবে। এই বাসগুলো মিরপুর ১২ নম্বরের বিআরটিসি বাস ডিপো, নন্দনপার্কের সামনে, কল্যাণপুর বাস ডিপো, চন্দ্রা মোড়ে, মতিঝিল বাস ডিপো, মহাখালী বাস টার্মিনাল, জোয়ারসাহারা বাস ডিপো, মোহাম্মদপুর বাস ডিপো, হেমায়েতপুর বাস স্ট্যান্ড এবং চন্দ্রা বাস স্ট্যান্ডে রিজার্ভ থাকবে।
বিআরটিসির পক্ষ থেকে টিকিটসহ যে কোনো প্রয়োজনে যাত্রীদের মতিঝিল বাস ডিপো (০১৭১২২৮১১২১), কল্যাণপুর বাস ডিপো (০১৭১১৫৭৮৭৪৪), গাবতলী বাস ডিপো (০১৮১৮৪৮৫৩৮৮), জোয়ারসাহারা বাস ডিপো (০১৬১৯৪৫৭২৪৫), মিরপুর বাস ডিপো (০১৭৪০০৯৮৮৮৮), মোহাম্মদপুর বাস ডিপো (০১৭১২২২৪০৩৮), গাজীপুর বাস ডিপো (০১৮১৭৭৮২৮৬৬), যাত্রাবাড়ী বাস ডিপো (০১৭১১৩৯১৫১৪), নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো (০১৭১৬৬৮৪১৪৪), কুমিল্লা বাস ডিপো (০১৭৫৮৮৮০০১১) এবং নরসিংদী বাস ডিপো (০১৫৫৩৩৪৯৫৬৭) নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিআরটিসি সূত্র আরও জানায়, গত বছরের ঈদে বিআরটিসির ৯০৪টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে ৪৭৫টি বাস ঢাকা থেকে এবং ৩৭৫টি বাস ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন জেলায় উপজেলায় চলাচল করে। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্যান্য বাস থেকে এই বাসের তুলনামূলক ভাড়া কম বলে স্বল্প আয়ের মানুষ বিআরটিসি বাসে সবচেয়ে বেশি চলাচল করেন। বিশেষ করে পোশাককর্মীরা এসব বাসে বেশি যাতায়াত করেন।
আরএম/এমএমজেড/এমকেএইচ