‘কাঙ্ক্ষিত’ টিকিট যেন সোনার হরিণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ১৭ মে ২০১৯

সকাল সাড়ে ৬টায় টিকিট বিক্রি শুরু হলেও সেহেরিতে আইসা লাইনে খাড়াইছি। কিন্তু দুপুর বেলায় সিরিয়াল পাইয়া দেখি ৩০ তারিখের টিকিট প্রায় শেষ। ভাবছিলাম দিনে অফিস কইরা বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাতে হানিফ পরিবহনের বাসে বাড়ি ফিরব। সেটা আর হইলো না। আবার পরদিন সকালের এসি টিকিটও নেই। কাউন্টারে টিকিট যেন সোনার হরিণ।

এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করে শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে দিনাজপুর রুটের যাত্রী আসিফ আলী বলেন, ‘টিকিট পাই নাই তা নয়, পাইছি। কিন্তু যে দিনের চাহিদা সেদিনের পাই নাই। যদি পরিবহন কর্তৃপক্ষ ভাবতো, চাহিদা যেদিন বেশি সেদিন গাড়ি ২-৩টা বাড়ায় দেব তাহলে আর টিকিটের হাহাকার কম হইতো।’

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শুক্রবার (১৭ মে) সকাল সাড়ে ৬টায়। রাজধানীর কল্যাণপুর, শ্যামলী, গাবতলী, মহাখালী ও আসাদগেট বাস কাউন্টারে দেয়া হচ্ছে অগ্রিম টিকিট।

পরিবহন সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুন ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য দিন ধরে টিকিট বিক্রি চলছে। ৩০ মে বৃহস্পতিবার ২৪ রমজান। পরের দু’দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এরপরের দিন ২ জুন (২৭ রমজান) শবে কদরের ছুটি। ৩ জুন সবশেষ কর্মদিবস। যে কারণে এবার ৩০ মে ও ৩ জুনের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাবতলী হানিফ পরিবহন কাউন্টার থেকে জানানো হয়, ৩ জুনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন টিকিট প্রত্যাশীরা। বিকেলে জানানো হয়, হানিফ পরিবহনের সব রুটের এসি বাসের টিকিট শেষ।

হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তাদের ৯০ শতাংশের চাহিদা ৩ তারিখের টিকিট লাগবে। এক যাত্রী একাধিক টিকিট কিনছেন। যে কারণে দ্রুতই ওই দিনের সব রুটের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। আর আমাদের এসি বাস সীমিত দ্রুতই তা শেষ হয়ে গেছে।’

কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট ও এসি টিকিট না পাওয়া নিয়েও হাহাকার লক্ষ্য করা গেছে এসআর ট্রাভেলস ও আলহামরা পরিবহনের কাউন্টারেও। কাউন্টার দুটির সামনে লম্বা লাইন হাজারো যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও দিন শেষে কাঙ্ক্ষিত টিকিট নিয়ে মনঃক্ষুণ্ন অনেকেই।

ticket-(1)

আব্দুস সবুর নামে এক বেসরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘গরম কাল চলছে। স্ত্রী-সন্তানসহ ভাবছিলাম ৩ তারিখ গাইবান্ধায় যাব। কিন্তু এসির টিকিট শেষ বলে জানানো হয়েছে।’ তবে ৩ তারিখ রাতের নন এসি ৪টি টিকিট কিনতে পেরেও খুশি তিনি।

এরআরের টিকিট বিক্রেতা জানান, চাহিদা বেশি থাকায় ৩০ মে ও ৩ জুনের টিকিট শেষ। তবে অন্যদিনের টিকিট মিলছে।

শ্যামলী পরিবহনের ৪টি কাউন্টার থেকে দেয়া হচ্ছে ঈদুল ফিতরের বাসের টিকিট। কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে গাইবান্ধা, রংপুর কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর রুটের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। শ্যামলী থেকে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈলের টিকিট, আসাদগেট থেকে ফুলবাড়ী-দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারীর এবং টেকনিক্যাল মোহনা পাম্পের কাউন্টার থেকে দেয়া হচ্ছে পাবনার টিকিট।

শ্যামলীতে পঞ্চগড়ের যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হানিফে এসি বাসের ভাড়া চায় ২০০০ টাকা। বাধ্য হয়ে টিকিট না কেটে শ্যামলীতে আসছি। এখানে এসেও বিশেষ পার্থক্য পাইনি। এখানে ১৮০০ টাকা। বাধ্য হয়ে কেনা।’

কল্যাণপুরে শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার আলমগীর কবীর বলেন, ‘এবার গরম বেশি হওয়ায় এসি বাসের টিকিটের আগ্রহ বেশি। সবাইকে কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট দেয়া সম্ভব না। একটু কম বেশি তো হয়ই। তবে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত টিকিট দিতে।’

জেইউ/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।