পুরনোদের স্থায়ী না করে ৪৬৮ জনের নতুন নিয়োগে ইসিতে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৬ পিএম, ১৪ মে ২০১৯

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ১ হাজার ১৩০ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কর্মরত রয়েছেন। চলতি বছরের ৩০ জুন এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি, চাকরি স্থায়ী করার। তবে তাদের চাকরি স্থায়ী না করে একই পদে ৪৬৮ জনকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে ইসি। এতে করে এই প্রকল্পের ডাটা অপারেটরদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, গত ১১ মে এই প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মধ্য থেকে প্রায় একশ জন কর্মী নির্বাচন কমিশনে আসে। এ সময় তারা চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বরাবর একটি চিঠি দেন।

ইসি সূত্র আরও জানায়, এ বিষয়ে সিইসির সঙ্গে আলোচনা করেন ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান। আলোচনা শেষে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামকে সারাদেশে কর্মরত ১ হাজার ১৩০ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের নতুন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ জানান।

গত ৩০ এপ্রিল ইসির সহকারী সচিব নুর নাহার ইসলাম সই করা এক নথিতে থেকে জানা যায়, ৪৬৮টি শূন্য পদে সরাসরি ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেয়ার জন্য খসড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তৈরি করেছে ইসি।

ইসিকে দেয়া ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় ২০০৭ সাল থেকে আরম্ভ হওয়া ‘ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্প’-এর কার্যক্রমের শুরু থেকে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন হালনাগাদ কার্যক্রমে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে আমরা কর্মরত আছি। আগামী ৩০ জনু চলমান প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। যা ১ হাজার ১৩০টি পরিবারের জন্য অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা হুমকিস্বরূপ ও অত্যন্ত হতাশাপূর্ণ। তাছাড়া ইতোমধ্যে আমাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বসয়ও পেরিয়ে গেছে। এরকম বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের সব উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয়ে নিয়োজিত এই জনবলকে দক্ষতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে বর্তমান প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. নাজমুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার দাবি আমাদের। কিন্তু নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে- চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার ক্ষেত্রে আইনগত সমস্যা আছে। আমাদেরকে আপাতত প্রজেক্টেই নেবে। সিস্টেম অনুযায়ী পাঁচ বছর পরে আমাদের রাজস্ব খাতে নেবে বা তখন দেখা যাবে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে নাজমুল হক আরও বলেন, ‘আমরা তো দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। নতুন করে যাদের নিয়োগ দেয়া হবে, তারা তো এ বিষয়ে কিছু জানে না। আমাদের স্থায়ী না করে নতুনদের স্থায়ীভাবে নিয়োগের বিষয়টি বোধগম্য নয়। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদের ইতিবাচক কোনো আশা দেয়নি।’

এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজস্ব খাতে নেয়াটা সরকারের নীতি নির্ধারণী ব্যাপার। এটা আমাদের বিষয় না। ১ হাজার ১৩০ জন আছে আমাদের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। তবে এটা তো সারাদেশের ব্যাপার, শুধু আইডিয়া প্রকল্পের না। সরকারের এরকম প্রজেক্ট তো হাজার হাজার আছে। সরকার দেখবে, টপ লেভেল থেকে দেখবে, কোনটা করলে ভালো হয়। আমরা চেষ্টা করব, আমাদের প্রকল্পের লোকগুলোকে কতটা ন্যায্য অধিকার তাদেরকে দেয়া যায়।’

পিডি/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।