দেড় কেজি তরমুজ ২২০ টাকা
গরমে তরমুজ খেতে কার না মন চায়। বাজারে গেলেই চোখে পড়ছে গ্রীষ্মের এই রসালো ফল। তবে দাম নিম্ন-আয়ের ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। তাই তরমুজের দাম শুনে না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও পিস হিসেবে আবার কোথায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। তবে পিস বা কেজি যেভাবেই বিক্রি হোক, সব বাজারেই তরমুজের দাম ব্যাপক চড়া।
যে ব্যবসায়ীরা কেজি দরে বিক্রি করছেন তাদের কাছ থেকে তরমুজ কিনতে প্রতি কেজির জন্য দিতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। আর পিস হিসেবে বিক্রি করা ব্যবসায়ীরা ছোট আকারের তরমুজ বিক্রি করছেন ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। মাঝারি আকারের তরমুজের দাম নেয়া হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
সোমবার সকালে রামপুরায় ফলের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তরমুজ বিক্রি করছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। কেউ ক্রেতা আকৃষ্ট করতে তরমুজ ঝুলিয়ে রেখেছেন। আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী ভ্যানগাড়িতে, ঝুড়িতে রেখে তরমুজ বিক্রি করছেন।
ভ্যানগাড়িতে করে বিক্রি করা মো. কামাল হোসেনের কাছে তরমুজের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেটিই নেন একদাম ২২০ টাকা। কোনো দরদাম করা যাবে না। তবে যেটা খুশি আপনি বেছে নিতে পারবেন।
এরপর ঝুড়ির ভেতর থেকে বড় সাইজের একটি তরমুজ নিয়ে পাশের দোকানে মেপে দেখা যায়, তরমুজটির ওজন ১ কেজি ৪৫০ গ্রাম। অর্থাৎ দেড় কেজিরও কম একপিস তরমুজের দাম ২২০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি তরমুজের দাম পড়ছে ১৫২ টাকা।
তরমুজের এত দাম কেন জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। বাদামতলীতে তরমুজের ব্যাপক দাম। এ কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রোজা শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তরমুজের দাম বাড়ছে। তাছাড়া আড়তে গেলে শোনা যায় এবার তরমুজের ফলনও কম হয়েছে। তাই আড়তে আমদানি (সরবরাহ) কম। এ কারণে দাম বাড়তি।
কামাল হোসেন যেখানে ভ্যানগাড়িতে তরমুজ বিক্রি করছিলেন তার থেকে অল্প কয়েক গজ দূরেই স্থায়ী ফলের দোকান বসিয়ে ব্যবসা করছেন মো. মাসুম। এই দোকানে জালে ভরে একাধিক তরমুজ ঝুঁলিয়ে রাখতে দেখা যায়।
তরমুজের দাম জানতে চাইলে মাসুম বলেন, একপিসের দাম ৪০০ টাকা। এ সময় এই তরমুজের ওজন কতোটুকু হবে? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রায় আড়াই কেজি হবে। তরমুজের এত দাম? এমন কথা বলতেই এই ব্যবসায়ী বলেন, নিলে নেবেন, না নিলে না নেবেন। আপনাকে তো জোর করে দিচ্ছি না।
এরপর মাসুম বলেন, ভাই কি করবো বলেন, আড়তে অনেক দাম। প্রতিদিন দাম বাড়ছে। বাদামতলী গেলে যে দাম চায়, শুনে আমাদেরও মাথা গরম হয়ে যায়। আবার আমাদের কাছে হরেক কিসিমের ক্রেতা আসে। কেউ কেউ আছে খালি দাম জিগায়। আর কয় এত দাম। কতক্ষণ এসব ভালো লাগে বলেন? বাড়তি দামে কিনে তো আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি না।
এদিকে বনশ্রীতে অবস্থিত সুপার সপ ‘স্বপ্ন’তে প্রতিকেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। সুপার সপটি থেকে তরমুজ কেনা ফরসাল হোসেন বলেন, ছেলে তরমুজ খাওয়ার বায়না করায় স্বপ্ন থেকে তরমুজ কিনতে এসেছি। প্রতিকেজি তরমুজের দাম ১২০ টাকা। তরমুজের এত দাম। এখনও তো তরমুজ শেষ হয়ে যায়নি। তরমুজের সিজন এখনও রয়েছে। তাহলে এত দাম কেন?
এমএএস/জেডএ/জেআইএম