শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর চালায় ১৯০ জন


প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার ন্যায় কাজ করলেও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে নেই প্রয়োজনীয় লোকবল। রাজস্ব বোর্ডের অধীনস্থ এই দফতরটির অনুমোদিত লোকবলের সংখ্যা ৩২৯ জন বলা হলেও জনবল রয়েছে মাত্র ১৯০ জন। যা কাজের পরিধি ও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।  

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা দাবি করে বলেন, দফতরটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে কাজ করার কারণে প্রত্যাশাও অনেক বেশি। কিন্তু সে অনুযায়ী লোকবল, নিজস্ব ভবন ও প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা নেই। সে কারণে আন্তরিকতা স্বত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে দফতরটি।

সূত্রটি আরো দাবি করেন, সীমাবদ্ধতা স্বত্ত্বের এ দফতরে কর্মরতরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। লোকবল বৃদ্ধি, নিজস্ব ভবন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে আরও ব্যাপকভাবে কাজ করা সম্ভব। অথচ দেশব্যাপী কার্যক্রম বিস্তৃত হলেও জনবল সংকটে ধুকছে দফতরটি। বর্তমানে ৪টি আঞ্চলিক ও ১৭টি সার্কেলে অনুমোদিত জনবল ৩২৯ জন। কিন্তু পদস্থ আছে মাত্র ১৯০ জন।

মাঠ পর্যায়ে আরও ভয়াবহ জনবল সংকট দাবি করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, মাঠ পর্যায়ের মূল সহকারী রাজস্ব কর্সকর্তার মোট ১১০ জনের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৫৪ জন। একইভাবে ২৩ রাজস্ব কর্মকর্তার মধ্যে আছেন মাত্র ১০ জন।

কার্যক্রম বেগবান করতে অন্তরায় হিসেবে  তীব্র জনবল সংকট কাজ করছে উল্লেখ করে সূত্রটি আরও জানায়, অন্যান্য গোয়েন্দা বাহিনীর কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত যন্ত্রাংশের সংযোজন ঘটলেও সনাতনী পদ্ধতিতেই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে দফতরটিকে।

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের নিত্য প্রযুক্তিগত নতুন কৌশলকে ধরতে গোয়েন্দা নজরদারিতে প্রযুক্তিগত উন্নতির কোনো বিকল্প নেই বলেও দাবি সূত্রটির।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের নিজস্ব ভবনও নেই। ফলে গোয়েন্দা কার্যক্রমের গোপনীয়তা ও কাজের মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আপাতত ভাড়া বাসায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
 
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মইনুল খান জাগো নিউজকে বলেন, জনবল, নিজস্ব ভবন ও প্রযুক্তিগত কার্যক্রমের বিষয়টি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।

‘নিজস্ব ভবন তো লাগবেই পাশাপাশি জনবল ছাড়া ব্যাপকভাবে কাজ করা সম্ভব না। আবার প্রযুক্তিগত উন্নতি ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চোরাচালানকারীদের ধরাও কষ্টসাধ্য’।

তিনি বলেন, অপরাধীচক্র নিত্য নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চোরাচালানমূলক কাজ করে আসছে। তাদের টেক্কা দিতে গেলে নিজেদের প্রযুক্তিগত উন্নতি আনতে হবেই। এই ত্রয়ী সমস্যার আশু সমাধান চেয়ে রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নিজস্ব ভবন তৈরির কাজও চলছে। আশা করছি দ্রত সব সমস্যার সমাধান হবে।

এব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নজিবর রহমান বলেন, আমরা শুল্ক গোয়েন্দার জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। নিজস্ব ভবনেরও কাজ চলছে। প্রযুক্তি উন্নতির জন্য নতুন বেশ কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজনেরও প্রক্রিয়া চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে এ সব বিষয় অবগত করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে স্বল্প সময়ের মধ্যেই অধিদফতরটি অন্তরায়মু্ক্ত হবে।

জেইউ/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।