খাদ্য ভেজাল-বিষাক্তকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি
শুধু ভ্রাম্যমাণ আদালতই যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ইফতারিসহ খাদ্য ভেজাল ও বিষাক্তকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), পল্লীমা গ্রিনসহ ১৫টি সমমনা সংগঠন।
শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর চকবাজার জামে মসজিদের সামনে ‘মোবাইল কোর্টই যথেষ্ট নয়, ইফতারিসহ খাদ্য ভেজাল ও বিষাক্তকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে’ ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, পরিবেশবাদীদের দীর্ঘ আন্দোলন, গণমাধ্যমের ভূমিকা, হাইকোর্টের দিক নির্দেশনা, প্রশাসনের পদক্ষেপ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার ফলে মৌসুমী ফল বিশেষ করে আমে ফরমালিনের ব্যবহার কমেছে। শিশু খাদ্যসহ ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ- মাংস, দুধ, মিষ্টি, প্যাকেটজাত খাদ্য ও পানীয়সহ প্রায় সব ধরনের খাবারে উৎপাদন পর্যায় থেকে বাজারজাতকরণ ও খাদ্যগ্রহণ পর্যন্ত স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে। জনগণকে ভেজাল ও বিষমুক্ত খাদ্য সরবরাহের লক্ষ্যে সরকার নিয়মিতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও ভেজাল ও বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়নি। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতই এ সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট নয়। বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষ অসুস্থ হচ্ছে এমনকি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে যা নিরব গণহত্যার শামিল। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইনের কঠোর প্রয়োগ, দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, রমজানে ইফতারিতে যেসব খাদ্যপণ্যের সবচেয়ে বেশি চাহিদা সেগুলোর মধ্যে শরবত, খেজুর, ছোলা, মুড়ি, বেসন, ডাল, তেল, চিনি, দুধ, সেমাই, মুরগী, মাছ, দেশি-বিদেশি ফল, শসা, টমেটো, বেগুন, কাঁচা মরিচ, লেবু, আটা, ময়দা অন্যতম। রমজানের বাজার ধরার লক্ষ্যে এসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও মজুত করতে বিষাক্ত কেমিক্যাল, কৃত্রিম হরমোন গ্রোথ, ফরমালিন ও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইফতারিতে যেসব খাদ্যপণ্য বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলোর উৎপাদন, আমদানি, মজুতকরণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। অসাধু শিল্পপতি, উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, মজুতদার, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা অধিক মুনাফার লোভে এসব মিশ্রণ করে থাকে। রেল ইঞ্জিন, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, মোটর যান, নৌ যান ও কলকারখানার পোড়া তেল ও মবিল মিশ্রিত তেল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইফতার সামগ্রী ভাজা হয়। যা খেয়ে মানুষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং আগামী প্রজন্ম বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বড় হচ্ছে।
নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের (নাসফ) সভাপতি ও পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়নার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, পল্লীমা গ্রিনের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান, বানিপার সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, পল্লীমা সংসদের সাধারণ সম্পাদক আউয়াল কামরুজ্জামান ফরিদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
এএস/এএইচ/এমকেএইচ