ঘূর্ণিঝড় ফণীতে ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৫ পিএম, ০৯ মে ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে দেশে মোট ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়নে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে গত শনিবার সকালে কিছুটা দুর্বল অবস্থায় খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ঢাকা-ফরিদপুর অঞ্চল পেরিয়ে এটি ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপে পরিণত হয়।

শাহ কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে ৭৮ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাঁধের ক্ষতি হয়েছে ২৫১ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতে খরচ হবে ১৬১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে সেখানে মাছের ক্ষতি হয়েছে দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বন ও পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণসহ পুনর্বাসন পরিকল্পনা তৈরি করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

ফণীর তাণ্ডবে সারাদেশে ৬৩ জন আহত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বরগুনায় দুই এবং ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে মোট পাঁচজন মারা গেছেন।

ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে এনামুর রহমান বলেন, দুই হাজার ৩৬৩টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৮ হাজার ৬৭০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ২১ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফণীর কারণে ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া নেত্রকোনায় হাওরের যে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তা মেরামত করেছে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্মীপুরে ৩৫টি বিদ্যালয় ঘূর্ণিঝড়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। যাচাই-বাছাই করে সেগুলো সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাদের আওতাধীন ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে সভায়। ঝড়ে যেসব টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে মেরামত করতে বলা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ মওকুফ এবং পুনরায় ঋণ দেয়ার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে যেসব চাষী পরিশোধ করতে পারেননি, তাদের বিরুদ্ধে যেন মামলা করা না হয়, সেজন্য অর্থ বিভাগকে বলা হয়েছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সেই সুপারিশ করবে।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করার বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান এনামুর রহমান।

সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণি-দুর্গত মানুষের জন্য ১৪ হাজার ৫০ মেট্রিক টন চাল, তিন কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, চার হাজার বান্ডেল ঢেউটিন এবং গৃহ নির্মাণের জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে।

 

আরএমএম/জেডএ/এএইচ/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।