হত্যার হুমকি কেবল চরম ধৃষ্টতা নয়, মুক্তচিন্তা পরিপন্থী
মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এবং দুইজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছেন ২৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি।
তারা বলেছেন, হত্যার হুমকি কেবল চরম ধৃষ্টতার পরিচায়ক নয়, মুক্তচিন্তা ও প্রগতিশীলতার পরিপন্থী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যেকোনো মানুষের মুক্তচিন্তার আন্দোলনের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ও প্রকাশ্য হুমকি মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।
সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ২৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি। বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকারকর্মী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মুক্তিযোদ্ধা সুলতানা কামাল, লেখক ও সাংবাদিক এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির এবং লেখক অধ্যাপক মুনতাসির মামুনকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সমর্থিত অনলাইনভিত্তিক পত্রিকা ‘লোন উলফ’ মার্চ সংখ্যায় হত্যার প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা উল্লেখ করেছে।
এ ঘটনায় আমরা তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। সুলতানা কামাল তাকে হত্যার হুমকির বিষয়টি পুলিশের আইজিপিকে অবহিত করে তার নিরাপত্তা প্রদানের অনুরোধ করেছেন এবং ৪ মে ধানমন্ডি থানায় একই আবেদন সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করতে অনুরোধ করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বীর মুুক্তিযোদ্ধা, নারীর সমঅধিকার আদায়কর্মী, সংখ্যালঘু, আদিবাসী, পরিবেশ সুরক্ষা ইস্যুসহ যেকোনো ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের বিরুদ্ধে মৌলবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর হত্যার হুমকির তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই।
পাশাপাশি সুলতানা কামালের মতো আরও বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের হত্যার হুমকি দেয়াকে আমরা ধিক্কার জানাই। স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর পাশাপাশি উগ্র-মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সুলতানা কামালের বিরুদ্ধে এ ধরনের হুমকি দিয়ে চরম ধৃষ্টতার পরিচয় দিচ্ছে। এছাড়াও সুলতানা কামালকে হত্যার হুমকির অর্থ হচ্ছে স্বাধীন ও মুক্তিচিন্তাকে আঘাত ও বাধাগ্রস্ত করে স্বাধীনতার মূল্যবোধগুলিকে ভূলুণ্ঠিত করা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, নারী আন্দোলনকর্মী হামিদা হোসেন, সমাজকর্মী ও এমপি অ্যারোমা দত্ত, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশি কবির, মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারপার্সন শাহীন আনাম, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক, মেঘনা গুহঠাকুরতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, আমরাই পারি জোটের কো-চেয়ারপার্সন এম বি আখতার, উন্নয়নকর্মী ফারাহ কবির, এসিড সারভাইবরস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাসিমুন আরা হক মিনু প্রমুখ।
বিএ