রোহিঙ্গা সঙ্কটে কাজ করতে নেদারল্যান্ডস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৯ পিএম, ০৫ মে ২০১৯

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটে কাজ করতে নেদারল্যান্ডস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ডাচ রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভেরওয়ে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্র উন্নয়নে বাংলাদেশের যে প্রয়াস রয়েছে তার পাশে দাঁড়াতে নেদারল্যান্ডস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

রোববার (৫ মে) রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিকাব টক-এ তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয় তুলে ধরেন ডাচ রাষ্ট্রদূত। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে সংগঠনটির সভাপতি রাহীদ এজাজ ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব বক্তব্য রাখেন।

হ্যারি ভেরওয়ে বলেন, গণতন্ত্র এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং তারা একত্রে কাজ করে। নেদারল্যান্ডসে মানবাধিকার হচ্ছে মানুষের উন্নয়ন, স্বাধীনতা ও মর্যাদার ভিত্তি। এ কারণে বাক স্বাধীনতা এবং ইন্টারনেটে স্বাধীনতা আমাদের কাছে অগ্রাধিকারপূর্ণ। আমরা গ্রাম অঞ্চলে কমিউনিটি রেডিওগুলোকে সহযোগিতা করেছি। এছাড়া যারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তাদের সহায়তা দিচ্ছি এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বাড়িয়েছি।

ডাচ রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৯ সালে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশ ১৫০তম হয়েছে। এ পরিস্থিতির উন্নয়নে আমাদের অবশ্যই অন্যকে তার মতামত ও ভিন্নমত দেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। কাউকে সত্য প্রকাশের কারণে ক্ষুব্ধ হলে চলবে না। মুক্ত মত নিজেই নিজের জীবন।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতার কারণে গণতন্ত্র ক্রিয়াশীল হয়। নেদারল্যান্ডস বাক স্বাধীনতা, সংবাদিকদের মানবাধিকার রক্ষা, মুক্ত বিতর্ক ও সুশীল সমাজকে সহায়তা এবং উন্নয়নে কাজ করে। কারণ, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র উন্নয়নে বাক স্বাধীনতা সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।

রোহিঙ্গা নিয়ে হ্যারি ভেরওয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতা বিচারে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) স্বাধীনভাবে কাজ করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিসি একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত। আইসিসি রোহিঙ্গা নৃশংসতা নিয়ে তদন্ত ও বিচার করছে। তারা স্বাধীনভাবেই এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয়। তবে বিচার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের ভূমিকা ইতিবাচক।

বাংলাদেশের ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডসের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে নেদারল্যান্ডস। এ বিষয়ে কাজ করতে নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশে আসবেন।

হ্যারি ভেরওয়ে বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের পণ্য প্রসারে আরও নানা উদ্যোগ নিতে হবে।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক শিল্প কারখানায় কর্মপরিবেশ উন্নত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেন এই কূটনীতিক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় অর্ধশতক ধরে নেদারল্যান্ডসের সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমরা জোরদার করে চলেছি। আগামী দিনেও দু’দেশের মধ্যে নানা বিষয়ে সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।

বিএনপির এমপিদের সংসদে যোগ দেওয়াকে ইতিবাচক বলে ইঙ্গিত করেন তিনি। বলেন, কেউ যদি জাতীয় সংসদে কোনো আসনে জয়ী হন, তবে তিনি যেকোনো দলের হোন না কেন, তার সংসদে যোগ দেয়া উচিত।

জেপি/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।