ফণী মোকাবিলায় ‘প্রস্তুত বাংলাদেশ’
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২১ এএম, ০৪ মে ২০১৯
ঘূর্ণিঝড় ফণীর মূল অংশটি বাংলাদেশের সীমানা থেকে এখনও ২০০ কিলোমিটার দূরে ভারতে অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে ওড়িশায় ভয়ঙ্কর তাণ্ডবলীলা চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এটি। ফণীর আসন্ন আঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত?
এর উত্তর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। শুক্রবার রাতে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ধেয়ে আসছে ফণী, প্রস্তুত বাংলাদেশ।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রামকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।’
ফণী মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ সমূহ উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘দেশের ১৯ উপকূলীয় জেলায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত। উপকূলীয় ১৯ জেলার মোট ৩,৮৬৮টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত, দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, সকল জেলা প্রশাসকদের ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও পাঁচ লাখ করে টাকা দেয়া হয়েছে।’
ফণী’র প্রভাব মোকাবিলা ও জরুরি তথ্য আদান-প্রদানের কন্ট্রোল রুম নম্বর ০২৯৫৪৬০৭২ এর কথা উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতের শঙ্কায় সারাদেশে নৌ-চলাচল বন্ধ, প্রস্তুত নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজ, দুর্যোগ চলাকালীন বা পরবর্তী সময়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ফণী'র পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিআইডাব্লিউটিএসহ সকল সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল।’
সর্বশেষ তিনি লেখেন, ‘সতর্ক থাকুন, সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।’
এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ অবস্থা ও মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সারাদেশের আকাশ ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টির আকার বড় বলে এটি এখনও বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করা সত্ত্বেও সারা বাংলাদেশের আকাশ মেঘলা হয়ে গেছে। শক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বয়ে গেছে। তবে মূল ঝড় এবং এর সঙ্গে যে শক্তিশালী ঝোড়ো হওয়া বয়ে যাওয়ার কথা, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধির কারণে এটিতে দেরি হচ্ছে। আমাদের ধারণা, আজ মধ্য রাতের পর থেকে সেই প্রবল ঝোড়ো হওয়াও শুরু হবে।’
ফণী ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে জানিয়ে পরিচালক বলেন, ‘এ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশ সমুদ্রে নেই, এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে ২০০ কিলোমিটার দূরে ভারতীয় অংশে অবস্থান করছে। কাছেই চলে এসেছে। এটি ওড়িশায় ১৮০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে আঘাত করেছে, এখন এটি কমে এসেছে। ধীরে ধীরে ভূমির উপর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে কলকাতার কাছ দিয়ে বাংলাদেশের কাছাকাছি এলাকা দিয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হবে।’
‘বাংলাদেশ দিয়ে যখন মূল অংশ অতিক্রম করবে তখন বাতাদের গতি কোথাও ৬২, কোথাও ৮০, কোথাও ১০০ কিলোমিটার হতে পারে।’
ইতোমধ্যে আঘাত হেনে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার গতি ছিল বাতাসের। বাংলাদেশে যখন পৌঁছাবে তখন গতি অর্ধেকের মতো হয়ে যাচ্ছে, গতি হচ্ছে ১০০ কিলোমিটারের মতো।’
‘আরেকটা বিষয় আছে, এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে, ১০০ কিলোমিটার বেগের বাতাস অতীতে দেখা- প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে’- যোগ করেন তিনি।
এমএআর/এসআর