মাথাপিছু ঋণ ১৩ হাজার ১৬০ টাকা : অর্থমন্ত্রী


প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু ঋণ ১৩ হাজার ১৬০ টাকা বা  ১৬৯ মার্কিন ডলার বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মহিলা সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগমের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান তিনি। সংসদে অর্থমন্ত্রীর  অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে উত্তর দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৩০ জুন তারিখে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের (পাবলিক সেক্টর) স্থিতির পরিমাণ ২৫ হাজার ৯০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। আর জনগণের মাথাপিছু এ ঋণের পরিমাণ ১৬৯ দশমিক শূন্য মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ১৬০টাকা।

তার মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বা দেশ অনুযায়ী বৈদেশিক ঋণের স্থিতির পরিমাণের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)’র কাছে ৬১৮৫০দশমিক ৫৬ কোটি টাকা, চীনের কাছে ৭,৩৫৬দশমিক ০৮ কোটি টাকা, আইডিএ`র (বিশ্বব্যাংক) কাছে ১০২,৩৪৩ দশমিক ৫ কোটি টাকা, আইডিবি ৩,৩৫৮ দশমিক ২১ কোটি টাকা, ডেনমার্কের কাছে ৮৬৯ দশমিক ২১ কোটি টাকা, জাপানের কাছে ১৯,৩৭৬ দশমিক ১৮ কোটি টাকা, ভারতের কাছে ১,৬৫৭ দশমিক ৪৫ কোটি টাকা, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২,৭৯১ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা, কুয়েতের কাছে ১,০৭৫দশমিক ৪৬ কোটি টাকা, ইফাদের কাছে ২,৯৩৫দশমিক ৩ কোটি টাকা, অন্যান্য ক্ষেত্রে ৩৬৫০ দশমিক ৭২ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম, আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২৫ হাজার ৯০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ২,০৭,২৬৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ওই অর্থবছরেই  সুদ বাবদ ১৮২দশমিক ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

‘বিগত অর্থবছরে ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ পাওনা অর্থ বকেয়া আছে কিনা এবং থাকলে এর পরিমাণ কত’ শওকত চৌধুরীর আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘‘ভ্যাট বাবদ এ বকেয়ার পরিমাণ ৩২ কোটি ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৩৩ টাকা এবং শুল্ক বাবদ ৬৬৫ কোটি ৮১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮২ টাকা।

সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য বেগম ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রশ্নোত্তরে এম এ মান্নান জানান, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি ডাটাবেজ রক্ষিত জুন, ২০১৫ মাস ভিত্তিক ৫০হাজার  টাকা ও বকেয়া স্থিতিসম্পন্ন ঋণ হিসাব এবং ১০ হাজার টাকা ও বকেয়া স্থিতিসম্পন্ন খেলাপী ক্রেডিট কার্ড হিসাবের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ঋণ খেলাপীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫শত ৮১জন।

ঋণ খেলাপী বিষয়ক মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করে ব্যাংক ঋণ দ্রুত আদায়ের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী।

পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। চলতি অর্থবছরে অর্থাৎ জুলাই ২০১৫ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮১১ দশমিক ৫২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
 
সংরক্ষিত মহিলা আসনের ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে জুলাই ১ থেকে জুলাই ৩১ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউসের আওতায় চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৮২৮ দশমিক ২১ কোটি টাকা এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৩৭১ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। জুলাই ১ থেকে জুলাই ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ১৩ হাজার ৮১১ দশমিক ৫২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশর মাধ্যমে জুলাই ১ থেকে জুলাই ৩১ তারিখ পর্যন্ত লেনদেনের পরিমাণ ৪৩৩ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা। এ চারটি চ্যানেলের মাধ্যমে সর্বমোট ২১ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত জুন ২০১৫ ও জুলাই ২০১৫ মাসে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৩৯ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ১ হাজার ৩৮৯ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবাসী রেমিটেন্স আহরিত হয়েছে যা মাসিক বিবেচনায় অন্যান্য মাস থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি।  

এইচএস/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।