তীব্র প্রবল ঘূর্ণিঝড় (এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) ফণীর শক্তি কিছুটা কমেছে। এটি এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
একই সঙ্গে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজারে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রেখেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার বিকেলে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৩৮) বলা হয়েছে, ভারতের ওড়িশা উপকূল ও কাছাকাছি উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি শুক্রবার বিকেল ৩টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও কাছকাছি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির পার্শ্ববর্তী এলাকার কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অপরদিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
আরএমএম/এনডিএস/পিআর