ভারতেও ওড়িশায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে বর্তমানে ফণী মোংলা বন্দর থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বে অবস্থান করছে।
এটি আজ (শুক্রবার) মধ্যরাতে বাংলাদেশের খুলনা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অধিদফতরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের উপ-পরিচালক আয়েশা খাতুন।
তিনি বলেন, ‘এই অতি প্রবল ঘুর্ণিঝড় ফণী, উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে, আজকে সকাল ৯টায় ভারতের পুরীর কাছ দিয়ে ওড়িশা উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এই উপকূলটা অতিক্রম আজকে বিকাল নাগাদ সম্পন্ন হতে পারে। আজকে সকাল ৯টায় ফণীর যে অবস্থান, সেখান থেকে আমাদের যে সমুদ্র বন্দরগুলো আছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দূরুত্ব মোংলার। মোংলা থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দূরে আছে ঘূর্ণিঝড়টি।’
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করার পর এটা আবারও উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে বলেও জানান আয়েশা খাতুন। তার বক্তব্য, ‘এটা ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করে আজ মাঝরাত নাগাদ বাংলাদেশে পৌঁছাতে পারে।
দেশের অনেক স্থানে মেঘলা আকাশ আছে এবং ঢাকাতেও বৃষ্টিপাত ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবেই হয়েছে।
আয়েশা খাতুন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হচ্ছে ১৮০ কিলোমিটার। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে এই উপ-পরিচালক আরও বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের যে অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল আছে, সেগুলোও কিন্তু এই ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।’
‘আর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছি। সেই সাথে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও চাঁদপুর এবং তাদের যে অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল এই ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে আমরা ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছি।’
ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা যেমন: চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উঁচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানান আয়েশা খাতুন।
পিডি/এনএফ/এমকেএইচ