ফণী মোকাবেলায় তিন বিভাগে ২ হাজার ৩৬২ মেডিকেল টিম
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ০২ মে ২০১৯
তীব্র প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের ওড়িশা হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। এই অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় তিন বিভাগে মোট ২ হাজার ৩৬২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মুজিবর রহমান এসব মেডিকেল টিম গঠনের কথা জানান।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এই দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভাগীয় পর্যায়সহ জেলা ও উপজেলায় জরুরি সভা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে ‘ফণী’ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে নিয়ে আজ প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নির্দেশনামূলক গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত সম্ভাব্য জেলার সব উপজেলার সকল চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি এবং সব ধরনের প্রশিক্ষণ বাতিল করা হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।’
জেলা পর্যায়ে ৩টি, উপজেলা পর্যায়ে ৫টি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ১টি ‘জরুরি মেডিকেল টিম’ গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪৯৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪৮টি এবং খুলনা বিভাগে ৮১৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলেও জানান মুজিবর রহমান।
বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগে জেলা/উপজেলাভিত্তিক স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এই সব কন্ট্রোল রুম সব সময় ন্যাশনাল হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগের নম্বরগুলো হলো- ০১৭৬৯৯৫৪১৩৭, ০১৭৫৯১১৪৪৮৮, ৯৮৫৫৯৩৩।’
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ১০ হাজার ব্যক্তির জরুরি চিকিৎসা দেয়ার মতো প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সম্ভাব্য প্রত্যেকটি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ থেকে জরুরি দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য ওষুধ-সরঞ্জামাদি জেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এছাড়া দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একযোগে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ও জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী মেডিকেল হাসপাতাল থেকে নবীন চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষা পর্যায়ের শেষ ধাপের ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ন্যাশনাল রেপিড রেসপন্স টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও হটলাইনে যোগাযোগ করার জন্য বিশেষ নম্বরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নম্বরগুলো হলো- ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯২৭৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫।
‘ফণী’ এগিয়ে আসায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আরএমএম/এমবিআর/পিআর