ভারতের ওড়িশা উপকূল হয়ে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। ইতোমধ্যে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর সব আপডেট খবর থাকছে এ আয়োজনে-
ভয়ঙ্কর রূপে শক্তির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাণ্ডবলীলা দেখাতে পারে এই ঝড়, যা ১৯৭৬ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী হবে এই অঞ্চলে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ভারতের ওড়িশা উপকূল হয়ে আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫ হাজার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
এ কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফদতর। এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন > জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা নিয়ে এগোচ্ছে ফণী
‘ফণী’র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
অধিদফতরের সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন > ফণীর বৃষ্টি শুরু বাংলাদেশে
উপকূলের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, উপকূলীয় এলাকার অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচলে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তন হলে যেকোনো সময় লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হবে। তবে সাগর উত্তাল থাকায় এরমধ্যে সাগরে অবস্থান করা সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাগুলো মৎস্য বন্দরে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন > খুলনায় বেড়েছে জোয়ারের পানির উচ্চতা
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের উপকূলে আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে ৪ মে শনিবার বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। তবে এরই মধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে। পুরো খুলনাজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ করছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফণীর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় নদ-নদীগুলোর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের থেকে কমপক্ষে ৫ ফুট ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলার ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
আরও পড়ুন > ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নামটি যেভাবে এলো
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ নাম দিয়েছে বাংলাদেশ। এর অর্থ সাপ বা ফণা তুলতে পারে এমন প্রাণি। ইংরেজিতে (Fani) লেখা হলেও এর উচ্চারণ ‘ফণী’।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। উদাহরণস্বরূপ- ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান, যাদের প্যানেলকে বলা হয় WMO/ESCAP।
একসময় ঝড়গুলোকে নানা নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হতো। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। সে সময় আটটি দেশ মিলে মোট ৬৪টি নাম প্রস্তাব করে। সেসব ঝড়ের নামের মধ্যে এখন ‘ফণী’ ঝড়কে বাদ দিলে আর সাতটি নাম বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন > ফণী আঘাত হানছে না বিসিএসে
৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার নির্ধারিত সময়েই শুরু হবে। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ১৬৫টি কেন্দ্রে সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একযোগে এ পরীক্ষা শুরু হবে।
এ সময়ের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হানার পূর্বাভাস না থাকায়, পরীক্ষার সময় অপরিবর্তিত থাকবে বলে বৃহস্পতিবার সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে জানানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর আরও নিউজ পড়ুন-
আরও পড়ুন > ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুত চট্টগ্রাম
জেডএ/জেআইএম