বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপে প্রাধান্য পাবে জঙ্গি ইস্যু

কূটনৈতিক প্রতিবেদক কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫১ এএম, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সপ্তম নিরাপত্তা সংলাপ। আগামী ২ মে ঢাকায় এই নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

দু’দেশের পক্ষ থেকেই জঙ্গিবাদ দমনের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র। এর পাশাপাশি ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির, আর ঢাকার পক্ষ থেকে শান্তিরক্ষা মিশনে আরও সৈন্য পাঠানোর বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘দু’দেশেরই প্রাধান্য অনুযায়ী বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে জঙ্গিবাদ দমনের বিষয়টি। এছাড়া মিলিটারি সহযোগিতা, সার্বিক নিরাপত্তা সহযোগিতা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ও থাকবে। তবে জঙ্গিবাদের বাইরে শান্তিরক্ষা মিশনের বিষয়টিতে বেশি জোর দেবে বাংলাদেশ।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এজেন্ডায় সমরাস্ত্র বিক্রির বিষয়টি পৃথকভাবে না থাকলেও বাংলাদেশকে অস্ত্র বিক্রির ভালো বাজার হিসেবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইতোমধ্যে আলাপ করেছেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। ফলে আশা করা যায় এ বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।’

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শান্তিরক্ষা মিশনকে প্রাধান্য দিয়ে বৈঠকের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শান্তিরক্ষা মিশনের বিষয়টি জাতিসংঘের হলেও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অর্থ সহায়তাকারী। ফলে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি শান্তিরক্ষী যাতে মিশনে যেতে পারে সে বিষয়টি বৈঠকে তোলা হবে।

সেই সঙ্গে শান্তিরক্ষীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাদের প্রশিক্ষণ, পুলিশের সাংগঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জঙ্গিবাদ দমনের প্রশিক্ষণ, জঙ্গি দমনে কৌশল নির্ধারণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রযুক্তি ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।

জানা গেছে, মূলত চারটি ধাপে অংশীদারত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে কৌলশগত অগ্রাধিকার ও আঞ্চলিক ইস্যু, দ্বিতীয় ধাপে দ্বিপাক্ষিক সশস্ত্র বাহিনী ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা, তৃতীয় ধাপে বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং সবশেষে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলা ও শান্তিরক্ষা। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এ সংলাপে অংশ নিতে ঢাকা আসছেন সাতজন মার্কিন কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সুনির্দিষ্টভাবে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এবং ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনৈতিকরাও এতে অংশ নেবেন।

জানা গেছে, এবারের সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রের পলিটিক্যাল অ্যান্ড মিলিটারি ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি এসিসটেন্ট সেক্রেটারি মাইকেল মিলার নেতৃত্ব দিবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস অনুবিভাগের মহাপরিচালক ফেরদৌসি শাহরিয়ার সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন। স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে থাকছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ভূমিকাকে আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রথম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

জেপি/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।