জায়ানের খেলার মাঠেই তার জানাজার আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

রাজধানীর মহাখালী থেকে বনানী প্রবেশের পর প্রথম ওভারব্রিজের ডানপাশের সড়ক। এর নাম বীর বিক্রম জাফর ইমাম সড়ক। এই সড়কের সামনে দাঁড়াতেই মুখোমুখি হতে হয় অপ্রিয় সত্যের, দেখা মেলে চরম বৈপরীত্যের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোলে হাস্যজ্জ্বল জায়ান চৌধুরীর একটি ছবি। কিন্তু পাশেই লেখা ‘শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী বোমা হামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির নাতি জায়ান চৌধুরীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’

এরকম অসংখ্যা ব্যানারে ছেয়ে গেছে জাফর ইমাম সড়কের দু’পাশ। রাস্তা দিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট এগোলেই বনানীর ২/এ’র ৯ নম্বর বাসা। শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিমের বাসা এটি। নানা বাড়ির এই বাসাতেই কেটেছে জায়ানের বড় একটা সময়। যেখানে প্রাণোচ্ছ্বল ছিল জায়ান। অথচ আজ সেই বাসাতেই চলছে শোকের মাতোম। জায়ানের আত্মার শান্তি কামনায় চলছে কোরআন তেলাওয়াত।

jayan2

বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে দেখা যায়, বাসার সামনেই অপেক্ষা করছে লাশবাহী গাড়ি। পারিবারিক সূত্র জানায়, দুপুর ১টা ১০ মিনিটে শ্রীলঙ্কা থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে করে আসবে জায়ানের নিথর দেহটি। বিমানবন্দর থেকে হয়তো এই গাড়িতে করেই আনা হবে তার মরদেহ।

বাসার গেট থেকে দৌড় দিলে জায়ানের হয়তো ৩০ সেকেন্ড লাগত মাঠে যেতে। যেখানে সে ক্রিকেট খেলত, প্রাণ খুলে ছুটে বেড়াত, মেতে উঠতো আনন্দে। আজ সেখানে চলছে তার জানাজার আয়োজন।

jayan2

মাঠের গেটের পাশের গাছটায় ফুটেছে রাঙা কৃষ্ণচূড়া। যে রাঙা ফুলের সৌন্দর্যে এতদিন জায়ান বিহব্বল হতো, আজ সেই ফুলও তাকে জানাবে শেষ বিদায়।

জায়ান আসবে বলে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। আসবেন সরকারের মন্ত্রী-এমপি, আসবেন সাধারণ মানুষও। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়িটি ঘিরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাদ আসর এখানেই হবে তার নামাজে জানাজা। পরে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।

jayan2

রোববার (২১ এপ্রিল) শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের জামাই মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত হন। নিহত হয় তার মশিউলের ছেলে জায়ান চৌধুরী। উত্তরায় সানবিম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল জায়ান।

শ্রীলঙ্কার ওইদিনের সিরিজ বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ওই হামলায় আহত হন অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ। সেদিনের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক।

পিডি/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।