ফের ফুটপাতে হকাররা, পথচারীরা রাস্তায়

আবু সালেহ সায়াদাত
আবু সালেহ সায়াদাত আবু সালেহ সায়াদাত , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০১৯

>> ডিএসসিসির ফুটপাত দখলমুক্তের উদ্যোগ টেকেনি দুই মাসও
>> বাধ্য হয়েই ফের মূল সড়কে পথচারীরা, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা

রাজধানীতে প্রতিদিন নানা পেশা, নানা রকমের মানুষের আনাগোনা। ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকার মধ্যে রয়েছে গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকা। বলা চলে রাজধানীর সবচেয়ে বেশি মানুষের পদচারণা থাকে এসব এলাকায়। যে কারণে এখানে দিন-রাত সবসময়ই মানুষে গিজগিজ করে। অথচ তারা স্বাচ্ছন্দে হাঁটার জন্য ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছে না। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যৌথ উদ্যোগে কয়েক মাস আগে হঠাৎই বদলে যায় ফুটপাতের চিরচেনা দৃশ্য। গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব এলাকার ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।

market

আরও পড়ুন>> হঠাৎ বদলে গেছে রাজধানীর ফুটপাতের দৃশ্য!

হকারদের জন্য রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকার যে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করাই মুশকিল ছিল, ডিএসসিসি ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে বদলে যায় সেই দৃশ্য। তারপর থেকে কিছু দিন আগেও এসব ফুটপাতে একটিও দোকান বা হকার ছিল না। ফলে স্বচ্ছন্দে চলাচল করতে পেরে সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছিলেন পথচারীরা। কিন্তু ডিএসসিসির ফুটপাত দখলমুক্ত রাখার উদ্যোগ দুই মাসও টেকেনি।

মাত্র দেড় মাসের মত সময় ফুটপাত দখলমুক্ত থাকার পর পথচারীদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে আবারও হকাররা বসে গেছেন। এতে পথচারীদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সড়কে বেড়েছে যানজট। যে গুলিস্থান, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় এত পথচারী কিন্তু সেখানে ফুটপাতে দিয়ে তাদের হেঁটে চলাচলের যেন কোনো অধিকারই নেই।

market

হকারমুক্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকা

পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল করে নানা রকমের পসরা সাজিয়ে রেখেছে অবৈধ দখলদাররা। তাই বাধ্য হয়েই পথচারীরা ফের নেমে এসেছেন মূল সড়কে। ফলে যান চলাচলে বিঘ্নের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সেই সঙ্গে থাকছে পথচারীদের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও।

রাজধানীর মুগদাপাড়া থেকে মতিঝিল পর্যন্ত লেগুনায় আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী নাজমুল হক। এরপর হেঁটে পল্টনে অফিসে পৌঁছান। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষভাগ থেকে ফুটপাত দিয়ে স্বাচ্ছন্দে হাঁটতে পেরেছিলাম, একটি দোকান বা হকারও ছিল না। হেঁটে যাওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দেড়-দুই মাস না যেতেই আবারও ফুটপাত দখল নিয়েছে হকাররা, ফলে আগের মত বিড়াম্বনা ফিরে এসেছে।

market

আরেক পথচারী সবুজ আহমেদ বলেন, গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ হেঁটে চলাচল করে। কিছু দিন ফুটপাত দখলমুক্ত থাকায় সবাই খুব ভালোভাবে চলাচল করতে পেরেছিল। কিন্তু বর্তমানে আবারও দখল হওয়ায় ফুটপাত দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে পথচারীদের মূল সড়ক ধরে হাঁটতে হচ্ছে। যে কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ডিএসসিসির উচিত পথচারীদের কথা মাথায় রেখে ফুটপাত দখলমুক্তে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা অভিযান চালিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করি। কিন্তু চলে আসার পর হকাররা অনেক সময় আবার বসে পড়ে। তাদের তো সব সময় আর পাহারা দেয়া সম্ভব না। তবে ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে আমাদের নিয়মিত প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।

market

রাজউকের সামনে হকারমুক্ত ফুটপাত

গুলিস্তানের ফুটপাতে জুতার দোকানি হাবিবুর রহমান বলেন, মাঝখানে কিছুদিন হকার উচ্ছেদে খুব চাপাচাপি ছিল। যে কারণে আমরা একটুও বসতে পারিনি। তবে ইদানিং তেমন একটা কড়াকড়ি নেই, তাই আমরা আবার বসতে শুরু করেছি।

তিনি বলেন, আমরা সাধারণ পথচারীদের সমস্যা করে ফুটপাতে হকারি করতে চাই না। পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করে দিলে ফুটপাত ছেড়ে চলে যাব। আমাদেরও পরিবার পরিজন আছে, ফুটপাতে বসে ব্যবসা না করলে আমরা চলব কীভাবে?

এএস/এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।