সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা তৈরিতে নেতৃত্ব সঙ্কট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ বলেছেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হওয়াদের মধ্যে তরুণরাই সবচেয়ে বেশি। এর হার ৭৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। এসব তরুণদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সচেতনার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির যেভাবে দ্রুত প্রসার ঘটছে, সেভাবে এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম নেই। এর মূলে রয়েছে নেতৃত্বের সঙ্কট।’

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটেতে ‘সাইবার অপরাধ ও সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ক সাংবাদিকতা ফেলোশিপ-২০১৯’ এর পুরস্কার প্রদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী মুস্তাফিজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত অভ্যাস, হতাশা ইত্যাদি পোস্ট করে উগ্রবাদী দলের নজরে পড়ে অনেক তরুণ। জীবনের প্রতি ভরসা হারানো এসব তরুণদেরকে উগ্রবাদে সহজেই দীক্ষিত করা সম্ভব হয় এবং এখান থেকেই শুরু হয় প্রাণঘাতী সহিংসতা।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া ইন্টারনেটে সত্যতা যাচাই ছাড়া বিভিন্ন গুজব বা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর মাধ্যমেও দেশে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। গুজবের মাধ্যমে ২০১২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এবং ২০১৭ সালের শেষ দিকে রংপুরের পাগলাপীরে হামলা, আগুন, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এসব কর্মকাণ্ড সাইবার অপরাধেরই অংশ।

২০০৯ সালের এক গবেষণার ফল তুলে ধরে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের কো-অর্ডিনেটর শাহানা হুদা বলেন, যেসব শিশু স্কুলে যায়, তাদের প্রায় ৭০ ভাগ পর্ন দেখে। বর্তমান সময়ে এর প্রসারতা বেড়েছে। ফলে ধর্ষণের মতো ঘটনায় বড় থেকে বাচ্চা, কেউ-ই রেহাই পাচ্ছে না।

সাইবার জগতে প্রবেশ করে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও পর্নগ্রাফি দেখে ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘সাইবার স্পেসে থেকে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করলে এটা খুব ফলপ্রসূ হবে না। এ জন্য শিক্ষার্থী, শিশুদের সময় দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ হাসান, উপদেষ্টা এ কে এম নজরুল হায়দার, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হোসেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ‘সাইবার অপরাধ ও সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ক সাংবাদিকতা ফেলোশিপ-২০১৯’ এ চার সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়। তারা হলেন- ‘সামাজিক মাধ্যম : আপনি নিজে গুজব ছড়াচ্ছেন না তো?’ প্রতিবেদনের জন্য বিবিসি বাংলার ফয়সাল মো. তিতুমীর; ‘প্রতি সেকেন্ডে সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছে হাজারো মানুষ’ প্রতিবেদনের জন্য নিউজ২৪-এর সিউল আহমেদ; ‘আইনের আশ্রয় নিতে অনিহার কারণে বাড়ছে সাইবার ক্রাইম’ প্রতিবেদনের জন্য এনটিভির আরাফাত আলী সিদ্দিকী এবং ‘সাইবার অপরাধ বাড়ছে : প্রতিরোধ দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই’ প্রতিবেদনের জন্য দৈনিক সমকালের সাজিদা ইসলাম পারুল।

পিডি/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।