নদী দখল-দূষণমুক্ত ও নাব্য ফেরাতে মাস্টার প্ল্যানের খসড়া চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯

আগামী ১০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখল, দূষণমুক্ত করা ও নাব্য ফিরিয়ে আনতে একটি মাস্টার প্ল্যানের (মহাপরিকল্পনা) খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার বিভাগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্য বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটির সভায় এটি চূড়ান্ত করা হয়। এই কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছেন।

বৈঠক শেষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে গ্রাম-গঞ্জের সকল মানুষের কাছে উন্নয়নের সব সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। তেমনিভাবে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করতে হবে, নাব্য ফেরাতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি টাস্কফোর্স বা কমিটি করা হয়েছে, পদাধিকার বলে আমি সেই কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি।’

river-1

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে কমিটি একটি খসড়া মাস্টার প্ল্যান করেছে, সেই মাস্টার প্ল্যানের ওপর আলোচনা করে আজকে নীতিগতভাবে সেটি অনুমোদন করেছি। একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কাছে অনুমোদিত খসড়া মাস্টার প্ল্যানটি উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে উনি অনেক আন্তরিক, বিষয়টাকে তিনি অনেক গুরুত্ব দেন, সেই হিসেবে এ বিষয়ে তার অনেক তথ্য জানা আছে। যদি কোথাও ইনপুট দেয়া দরকার মনে করেন, সংযোজন করা দরকার মনে করেন, তিনি সেটা করবেন।’

কত বছর মেয়াদি মাস্টার প্ল্যানটি, এর মধ্যে কী আছে- জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘টেমস নদী এক সময় দূষিত হয়ে গিয়েছিল, গার্বেজ ডাম্পিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেই টেমস নদী ৫০ থেকে ৫৫ বছর লেগেছে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে। আমরা যে মাস্টার প্ল্যানটি করেছি সেটাতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, স্বল্প মেয়াদী, মধ্যম মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে মাস্টার প্ল্যানটি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০ বছর। প্রাথমিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে। আপনারা দেখেছেন নদী দখল যেগুলো হচ্ছে তা মুক্ত করা হচ্ছে, ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এরপর ওয়াসার নেতৃত্বে স্যানিটেশনের কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকা শহরের স্যুয়ারেজ লাইন ঠিক করা হবে, যাতে নদীতে কোনো দূষিত পানি না যায়।’

river-1

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্জ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। বর্জ্য যাতে নদীতে এখানে সেখানে ডাম্পিং করা না হয় সেজন্য বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে করতে পারি, এই ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নদীর পুরো নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা ১০ বছরের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। নদীকে ড্রেজিং করতে হবে। পলি পড়ে নদীর বেডগুলো উচু হয়ে গেছে, সেগুলোতে আগের জায়গায় নিতে হবে। পানি দূষিত হয়ে গেছে, পানি ট্রিট করতে হবে। পানিতে আর যাতে দূষিত পদার্থ না যায় সেজন্য সোর্সগুলোকে বন্ধ করতে হবে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গৃহস্থলী ও শিল্পের বর্জ্য যাতে না যায় সেগুলোর জন্য অন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বর্জ্য সংগ্রহ করে আমরা ডিসপোজাল করে দেব, নদীতে যাতে না যায়।’

river-1

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কত টাকা লাগবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ এ বিষয়ে কাজ করে জানাবে।’

তিনি বলেন, ‘মহাপরিকল্পনার কাজগুলোকে ভাগ করে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়কে ওয়ার্কিং গ্রুপ ডিস্ট্রিবিউশন করে দেবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এরপর আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে পাওয়ার ডেলিগেট করা হবে।’

আরএমএম/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।