‘একটানা সরকারে থাকায় তৃণমূলের জনগণ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৯
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দেয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি দেশবাসীকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ একটানা সরকারে থাকার কারণে তৃণমূলের জনগণ আজ উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্ম পাবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ।’

আগামীকাল ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্র্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এদিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করা হয়। সেদিন থেকে এ স্থানটি ‘মুজিবনগর’ নামে পরিচিতি লাভ করে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঐতিহাসিক এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার (বঙ্গবন্ধুর) নির্দেশ অনুযায়ী মুক্তিকামী বাঙালি জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও তদানীন্তন ইপিআরসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকার (মুজিবনগর সরকার) দীর্ঘ ৯ মাস দক্ষতার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রশক্তির সহায়তায় চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য আড়াই মাসের ব্যবধানে ৩ নভেম্বর জেলখানায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

জাতির পিতাকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন ও জনগণের অধিকার সামরিক স্বৈরাচারের বুটের তলায় পিষ্ট হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়। স্বাধীনতা বিরোধীদের রাষ্ট্রমতার অংশীদার করা হয়।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেশে আবারও গণতন্ত্র ফিরে আসে। মানুষ ফিরে পায় তাদের অধিকার। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনকাল ছিল বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগ।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের প্রচলিত আদালতে বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি দায়মুক্ত হয়েছে। জেলখানায় নিহত চার জাতীয় নেতা হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে। ’৭১-এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানি বাহিনী এবং তার দোসরদের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ শুরুর দিন ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি। গত ১০ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি খাতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’।

এফএইচএস/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।