জলাবদ্ধতা-যানজটে স্থবির রাজধানী


প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

যানজট নিয়ন্ত্রণের কথা দিয়েও তা রক্ষা করতে পারছে না পুলিশ। একই হাল সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়েরও। এক রকম অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। আর রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে তিন মাসের সময় চেয়েছিলেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (উত্তর-দক্ষিণ) মেয়ররা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই জলাবদ্ধতা ও যানজটে স্থরিব হয়ে পড়েছে রাজধানীবাসী।

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে অবিরাম বৃষ্টি চলছে। এতে অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে হাঁটু কিংবা কোমর পানিতে। এর ফলে যানজটের তীব্রতা আরো বেড়েছে।
rain

জানা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ ব্যস্ত রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধান সড়ক ও এর আশপাশের এলাকার সড়কগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়াও এক রকম বন্ধ দেখা গেছে। পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আর জলাবদ্ধতাই যানজটের বড় কারণ বলে দাবি ট্রাফিক পুলিশের।

 

ডিএমপি’র ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলেন, পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব পুলিশের নয়। যেখানে স্বাভাবিক দিনেই রাজধানীর যানজট নিরসনে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয় সেখানে জলাবদ্ধতা যানজট তৈরিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এব্যাপারে ট্রাফিকের দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম-কমিশনার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান জানান, বলতে গেলে আজকের পরিস্থিতিতে পুলিশ অনেকটাই অসহায়। সময়ক্ষেপণ ছাড়া রাস্তায় কিছু করার থাকছে না। রাস্তা কলাপস (বন্ধ)। বৃষ্টির পানি সরছে না। পানির কারণে ছোট যানবাহন যেন তলিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে না পারলে যানজট সমস্যা নিরসন কষ্টকর।
rainতবে তিনি বলেন, বৃষ্টিতে যানজট নিরসনে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্র্রাফিক সদস্যদের সহায়তায় কাজ করছে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশও।

ডিএমপির ট্রাফিকের অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজধানীর পয়ঃপ্রণালী ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি দেখার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের নয়, তা দেখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার। তাদের কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। তারা তাদের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন না করায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। আর একারণেই যানজট হচ্ছে। আর দোষ হচ্ছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের।
rainএর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, রাজধানী এবং রাস্তায় যানজট থাকবে না। এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়ররা রাজধানীর জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে কাজ চলছে বলেও দাবি করেন। তবে অবস্থাদৃষ্ট ভিন্ন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত।

বৃষ্টিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মহাখালি, বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, ফার্মগেট, মগবাজার, মৌচাক, বনশ্রী, বনানী ও বনানী ফ্লাইওভার এলাকাসহ ব্যস্ত স্থানগুলো তলিয়ে গেছে। কোনো কোনো রাস্তা হাটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে যানজট লেগে আছে সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে। যানজটে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন যাত্রী ও চালকরা।
rainহাসপাতালে রোগীদের অবস্থা উষ্ঠাগত। টঙ্গি এলাকা থেকে আসা জাহানারা নামে একজন জানান, শাশুড়ীকে নিয়ে তিনি এসেছেন চিকিৎসা করাতে। কিন্তু সকাল ৯টায় রওয়ানা হলেও রাজধানীতে ঢুকতে পেরেছেন ৩টায়। ঢামেক হাসপাতালে যেতে আরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাকে। বনানী ফ্লাইওভারের নিচে ও এর আশপাশ এলাকায় পানি জমায় রাস্তার মাঝ বরাবর সব গাড়ি চলাচল করায় ওই এলাকায় এই যানজট বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ডালিম নামে প্রভাতী পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, রাজধানীতে তীব্র যানজট আর জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়ে প্যান্ট গুটিয়ে ব্যাগ ঘারে নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করেছি।

জেইউ/একে/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।