অনিয়ম-দুর্নীতি : পল্লী বিদ্যুতের বিভিন্ন কার্যালয়ে দুদকের হানা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:০৯ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯

দুদক হটলাইনে (১০৬) আসা গ্রাহক ভোগান্তি, অনিয়ম ও দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার একটি দল ভেড়ামারা এবং দৌলতপুর উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালায়। অভিযানে দৌলতপুরে গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করায় এক দালালকে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরদিকে একই অপরাধে দৌলতপুরের আরেক দালালকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

অপরদিকে দুদক ফরিদপুরের জেলা কার্যালয় মধুখালী উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিম উক্ত অফিসে গ্রাহক সেবা প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পায়। তবে দুদক টিমের উপস্থিতি টের পেয়ে দালালরা পালিয়ে যায়।

অপরদিকে দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে ফুলবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালানো হয়। টিম অভিযানকালে দেখে, অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দীর্ঘসূত্রিতার সঙ্গে জড়িত। একটি সেচ প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের বিষয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। অভিযানকারী টিম এ অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানের সুপারিশ করে কমিশনের নিকট প্রতিবেদন পেশ করবে।

এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানে হয়রানির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ এর একটি টিম আজ এ অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিম অফিসে উপস্থিত হয়ে দেখে, সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীরা লাইসেন্স প্রদানকারী কর্মকর্তার নিকট পৌঁছাতে পারেন না, তার পূর্বেই অফিসের কিছু কর্মচারী অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রমে অনিয়ম বিস্তার করে।

এই প্রক্রিয়ায় প্রতি লাইসেন্স বাবদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা গ্রাহকদের নিকট হতে অবৈধভাবে গ্রহণ করা হয়, কিন্তু কোনো রশিদ প্রদান করা হয় না। ওই দফতরের লাইসেন্স শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা বজলুর রশিদ এবং লাইসেন্স প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদের অনিয়মের বিষয়ে দুদক টিম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে অবহিত করলে তিনি দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

অপরদিকে একই টিম পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই একটি পেট্রলপাম্প নির্মাণের অভিযোগ খতিয়ে দেখে। গাজীপুর চৌরাস্তায় অবস্থিত এসএস পাম্প নামক পেট্রলপাম্পটি পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃক একাধিকবার আপত্তি প্রদান সত্ত্বেও নির্মিত হয়েছে এরুপ অভিযোগের বিষয়ে দুদক টিম অবগত হয়। টিম এ সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করে। যাচাই-বাছাইপূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

গাইবান্ধা সরকারি কলেজে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম ও মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে- এমন একটি অভিযোগ দুদকের গোচরে আসলে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের অনুরোধক্রমে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বুধবার ওই কলেজে অভিযান চালান এবং ১২১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্যদের সতর্ক করেন।

এদিকে গত ৮ এপ্রিল দুদক ময়মনসিংহ কার্যালয় থেকে পরিচালিত এক অভিযানে দুদক টিম নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে একজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের জন্য টাকা গ্রহণের অভিযোগ যাচাই করে। তাকে তিন বছর যাবত পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অযুহাতে ঘুরাচ্ছেন। বিষয়টি ওই অঞ্চলের জিএমকে জানালে, তিনি দুদক টিমকে অবহিত করেন, ওয়্যারিং রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে এলটি প্রকল্পের আওতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযোগকারীকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হবে।

এমইউ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।