বছরে ৩০০ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হয় হকারদের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৯
ফাইল ছবি

রাজধানীর হকারদের বছরে তিনশ কোটি টাকারও বেশি চাঁদা দিতে হয়। যার কোনো বৈধতা নেই। ওই টাকা রাজস্ব হিসেবে নিয়ে সিটি কর্পোরেশন হকারদের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারে। যার মাধ্যমে হকারদের জীবনমান উন্নয়ন ও পথচারীদের চলাচলের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত সম্ভব। গবেষণা তথ্য তুলে ধরে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন নগর গবেষক মারুফ হোসেন।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নগর ব্যবস্থাপনায় হকারদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন আয়োজিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুল হাশেম কবীর।

আলোচনায় অংশ নেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার এমপি, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, শিশু সংগঠক ডা. লেনিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সংগঠনের উপদেষ্টা সেকেন্দার হায়াৎ, মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ।

বৈঠকে মারুফ হোসেন আরও বলেন, যেখানে একজন হকারের (ডিম বিক্রেতা) ফুটপাতে পাঁচ বর্গফুট জায়গা লাগে, সেখানে একটি গাড়ি ১৬০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ যানজটের জন্য হকারদের দায়ী করে উচ্ছেদ ও মালামাল লুটপাট চলছে, যা অমানবিক। এ ধরনের অবাস্তব পদক্ষেপ থেকে সরে এসে যানজট নিরসনে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নাগরিকরা শতকরা ৯৫ ভাগ গরিব ও মধ্যবিত্ত। এর একটা অংশ হকার। আর হকারদের কাছ থেকে যারা ক্রয় করেন তারাও গরিব ও মধ্যবিত্ত।

সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, হকাররাও মানুষ। তাদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এই সরকারের আমলে গ্রামের মানুষ যেভাবে সুরক্ষা পাচ্ছে, একইভাবে হকারসহ শহরের মানুষদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হকারদের জন্য আইন হয়েছে। বাংলাদেশেও একই ধরনের আইন ও নীতিমালা করতে হবে। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনা ছাড়াও বেসরকারি বিল উত্থাপনের আশ্বাস দেন তিনি। গোল টেবিল বৈঠকে ১০ দফায় দাবি উত্থাপন করে তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ বন্ধ, হকারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, চাঁদাবাজি বন্ধ, হকারদের দমন পীড়ন বন্ধ, প্রকৃত হকারদের তালিকাভুক্তিকরণসহ আইডি কার্ড প্রদান, দখলকৃত সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে হকারদের পুনর্বাসন, হকারদের ট্যাক্সের অন্তর্ভুক্ত, পুনর্বাসনের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ এবং জাতীয় বাজেটে হকারদের জন্য বরাদ্দ রাখা।

এফএইচএস/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।