ভুটানের জলবিদ্যুতে অংশীদার হতে চায় বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ এএম, ০২ এপ্রিল ২০১৯

নিজ দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে রফতানির জন্য লুয়েন্স জেলায় ১১২৫ মেগাওয়াটের দর্জিলাং-হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়েছে ভুটান। আর এ প্রকল্পে অংশীদার হতে চায় বাংলাদেশ। চলতি মাসে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিংয়ের ঢাকা সফরকালে জলবিদ্যুৎ নিয়ে একটি সমঝোতার প্রস্তাব উত্থাপন করবে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী ১২ এপ্রিল ঢাকা সফরের কথা রয়েছে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিংয়ের। এরই প্রস্তুতি হিসেবে সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আসন্ন সফরকে ঘিরে দুই দেশের সম্ভাব্য সমঝোতা ও চুক্তি নিয়ে আলোচনা করে দু’দেশ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বিদ্যুৎ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু, দু’দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে সংযোগ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতায় ট্রানজিট ও কানেকটিভিটি, বিশেষ করে বিবিআইএনের (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল) অগ্রগতি এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটান-এই তিন দেশের সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতার কাজ করছে তারা। এতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, পর্যটন উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাত, কৃষিখাত এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে।

জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একটি তৃ-পক্ষীয় চুক্তি হবে। প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারত তিন দেশেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো আলোচনার টেবিলে রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এটি নিয়ে সমঝোতা হলে এরপর তিন দেশের বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা এটি নিয়ে আলোচনায় বসবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পটিতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।’

সূত্র জানায়, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একের পর এক বৈঠক করছেন। গতমাসে দুই দেশের মধ্যকার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট নিয়ে অগ্রগতি দেখতে গত ২৫ মার্চ থেকে গতকাল ১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল ছিল। প্রতিনিধি দলটি পণ্য পরিবহনের সম্ভাব্য রুটগুলো যাচাই করে দেখছে।

প্রসঙ্গত, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিং বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। লোতে শেরিং এমবিবিএস পাস করে বাংলাদেশেই জেনারেল সার্জারি বিষয়ে এফসিপিএস করেন। পরে দেশে ফিরে ২০১৩ সালে তিনি সিভিল সার্ভিস থেকে অব্যাহতি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশে প্রায় ১০ বছর কাটিয়েছেন।

জেপি/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।