‘এই অগ্নিকাণ্ডের পর ব্যবসায়ীদের বোধোদয় হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৩ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৯

গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর ব্যবসায়ীদের বোধোদয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর গুলশান-১ এর ডিএনসিসি কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড স্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এই দুর্ঘটনার জন্য আমি প্রথমেই সমবেদনা জানাই যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রতি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এক সময় খুব গরিব ছিলাম। দেশটার অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বেশিরভাগ অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের এসব অবকাঠামো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসার ব্যাপারে এখন নমনীয়তা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এই মার্কেটে এর আগেও একবার অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এই মার্কেট সম্পর্কে দেশবাসী জানেন। এখানে মার্কেট হওয়ার জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, তার যথেষ্ট গাফিলতি আছে। এর আগে অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়া হয়েছিল, পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে- এটাকে ভেঙে একটা নতুন মার্কেট তৈরি করার জন্য। কিন্তু বিভিন্ন আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে এখন কাজটাকে অত্যন্ত মন্থর করে দেয়া হয়েছে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আশা করি, আজকে এই দুর্ঘটনার পরে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সবার মধ্যে বোধোদয় না আসার কোনো কারণ নেই, সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা দেয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে কি-না জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা করা হবে। সরকারের নীতিমালা সাপেক্ষে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।’

মার্কেটে অগ্নিনিবার্পণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, না থাকলে কেন ছিল না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা অস্থায়ী মার্কেট। এটাকে পূর্ণাঙ্গ মার্কেটে রূপান্তরের জন্য সিটি কর্পোরেশন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।’

আগুনের ঝুঁকির কারণে এই মার্কেটের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস যে সুপারিশগুলো করেছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সেই সমস্ত সুপারিশ এখন থেকে কেউ বাস্তবায়ন না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এখানে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা আমরা শুনেছি, এই উদ্যোগ কতদূর- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটার জন্য সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করা আছে। টেন্ডার করা হয়েছে। আইনগত জটিলতা সৃষ্টি করে, যদি কোর্টে কোনো বিচারাধীন বিষয় থাকে সেখানে সরকার কোর্টের বাইরে যেতে পারে না। এই বিষয়টি দেশবাসী ভালো করে জানেন। যাদের এই বিষয়ে সহযোগিতা করার সুযোগ আছে তারা যদি সহযোগিতা করে আমি বিশ্বাস করি সরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।’

এসময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার জানা মতে এখানে ২৯১ দোকান আছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলেছেন আমাদের আবার মার্কেট করে দেন। মার্কেট করতে হয়ত ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে। আবার যখন অস্থায়ী মার্কেট হবে তখন কী ফায়ার হাইড্র্যান্ট থাকবে? আমি মনে করি, যারা ব্যবসায়ী আছেন, সময় এসেছে একসাথে কাজ করার জন্য।’

মেয়র বলেন, ‘ফায়ার এক্সিট, ফায়ার হাইড্র্যান্ট করতে হলে দোকানের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। দোকান মালিকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে দোকান কমানোর জন্য কারা এগিয়ে আসবেন। আমরা চাই সুন্দর একটা প্ল্যান করে কিছু একটা করার জন্য। দোকানদাররা বলছেন- আমরা এগুলো ভাড়া নিয়েছি, নতুন দোকান করা হলে মালিক পাবেন, ভাড়াটিয়ারা পাবেন না। এখানে অনেক ধরনের জটিলতা আছে।’

কারওয়ান বাজারের সিটি কর্পোরেশনের মার্কেটটিও চ্যালেঞ্জের মুখে আছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মার্কেটগুলোতেও আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।’

শনিবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারের পূর্ব পাশে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরএমএম/এআর/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।