ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে ব্যাখ্যা চেয়েছে জাতিসংঘ
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরে সরকারের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হলে সেখানে বসবাসের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে- তা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৫ মার্চ) ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়ে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে রোহিঙ্গাদের বিকল্প স্থানে সরিয়ে নেয়ার যে পরিকল্পনা সরকার করেছে জাতিসংঘ সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। তবে এ স্থানান্তর যেন রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে না ঘটে।
বলা হয়, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর নিয়ে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে জাতিসংঘ। এ ধরনের স্থানান্তরের সময় নিরাপত্তা, সহযোগিতা ও কারিগরি সুবিধা প্রয়োজন হয়। সেসব বিষয়েও সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে জাতিসংঘ। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং টেকসই বসবাস নিশ্চিত করতে সেখানে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত জটিল বিষয়সমূহ নিয়ে আমরা সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
ভাসানচরে যেন সহজেই বসবাস করা যায়, সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শরণার্থীরা ভাসানচরে যেতে রাজি হলে, তাদের কীভাবে স্থানান্তরিত করা হবে, স্থানটি বসবাস উপযোগী কি-না, সেখানে তাদের মৌলিক অধিকার থাকবে কি-না এবং তাদের জন্য কী কী সেবা নিশ্চিত করা হবে- সেগুলো নিয়ে আমরা সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি।
এছাড়া ওই স্থানের প্রশাসন কী হবে এবং জাতিসংঘ ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কীভাবে সেখানে যাবে সে বিষয়েও সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ফলে নতুন-পুরনো সব মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্তবর্তী কক্সবাজারে বসবাস করছে, যা সেখানকার স্থানীয় জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।
ফলে কক্সবাজারের ওপর চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেই অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে সরকার।
জেপি/আরএস/এমএস