এবারও রাজধানীতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ২৩ মার্চ ২০১৯
ফাইল ছবি

প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে। একটু বৃষ্টিতেই বড় বড় রাস্তার পাশাপাশি অলিগলিতেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ভারী বর্ষণে ছন্দপতন হয় রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক চলাচলে।

আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও জলাবদ্ধতার জোর আশঙ্কা রয়েছে রাজধানীতে। মূলত নগরীর পানি নিষ্কাশন পথগুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে। ড্রেনেজ লাইনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় সব রাস্তাঘাট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারী বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি ধারণের জন্য নগরীতে উপযুক্ত জলাধার নেই। সেই সঙ্গে পাম্পগুলোর ভারী বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতাও সীমিত। ফলে এবারও ঢাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা থাকবে।

রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই প্রতি বছর বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায় মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, গ্রিন রোড, কাঁঠালবাগান, কারওয়ানবাজার, তেজকুনীপাড়া, তেজতুরীবাজার, গার্ডেন রোড, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মতিঝিল, আরামবাগ, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড, উমেশ দত্ত রোড, বংশাল রোড, টিকাটুলী, মুগদা, খিলক্ষেত ও বঙ্গভবন এলাকায়।

জানা গেছে, রাজধানীতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য সাড়ে আট কিলোমিটার বক্স কালভার্ট এবং ৩৫০ কিলোমিটার স্টর্ম সুয়ারেজ লাইন রয়েছে। এর মধ্যে বক্স কালভার্ট ও ড্রেন দেখাশোনার দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার।

এছাড়া দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ড্রেন রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার এবং প্রায় ৪০০ কিলোমিটার ওয়াসার। বৃষ্টির পানি এই দুই মাধ্যমে বিভিন্ন জলাশয়, খাল বা নদীতে প্রবাহিত হয়। প্রতি বর্ষা মৌসুম শেষে ৮০ শতাংশ বক্স কালভার্ট ও স্টর্ম সুয়ারেজ লাইন ভরাট হয়ে যায়।

নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি হওয়ায় পানি নিষ্কাশন বিঘ্নিত হয়। ফলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। সেই ধারণা থেকে এবারও রাজধানীতে জলবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক নির্মাণ, নর্দমা, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ নির্মাণ ও সংস্কার, ফুটপাত নির্মাণ ও প্রশস্তকরণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে ডিএসসিসির বাসিন্দারা স্বচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারবেন। ড্রেনগুলো প্রশস্ত করা হলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও নিরসন হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য চলতি অর্থবছর তিন সংস্থা বড় বাজেটের কাজ শুরু করছে। জলাবদ্ধতা রোধে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছর বর্ষা মৌসুমের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চলতি বছরে ওয়াসার কাজের গতি বাড়াতে হবে। তা না হলে এ সমস্যার নিরসন হবে না। অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশন মূলত নতুন লাইন তৈরিতে ব্যস্ত। আগের ড্রেনগুলোর যেসব স্থান ভরাট হয়ে গেছে তা পরিষ্কারের ব্যাপারে তাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। এটা করা না হলে জলাবদ্ধাতা পিছু ছাড়বে না।

আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে করণীয় ঠিক করতে সম্প্রতি মেয়র আতিকুল ইসলামডিএনসিসির বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে বলেছেন, ‘আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি জলবদ্ধতা থেকে কিছুটা হলেও নগরবাসীকে মুক্তি দিতে। যদিও বর্ষা মৌসুম প্রায় চলে এসেছে, এই অল্প সময়ের মধ্যে শর্ট টার্মে কী কী করা যায় তা নিয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে কাজ করছি।’

এএস/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।