খন্দকার মোশাররফের আগাম জামিনের রিভিউ আবেদন খারিজ


প্রকাশিত: ১২:৩৬ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আগাম জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে আপিলের রায়ের রিভিউ(পুনর্বিবেচনা) চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রোববার  প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মওদুদ আহমদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, খন্দকার মোশাররফ এখনো জেলে রয়েছেন। সুতরাং এখানে তার আগাম জামিনের বিষয়ে কোন কজ অব অ্যাকশন নেই। এ জন্য আদালত তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।

এর আগে আগাম জামিন সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৮ জুন রিভিউ আবেদন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। ৯ জুলাই আপিল বিভাগ ওই আবেদন খারিজ করে দেন।

গত বছরের শুরুতে মানিলন্ডারিং মামলায় হাইকোর্ট ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। কিন্তু আপিল বিভাগ তার আগাম জামিন বাতিল করে হাইকোর্ট বিভাগের আগাম জামিন দেওয়া প্রসঙ্গে ওই বছরের ২০ মার্চ সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন।

রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, হাইকোর্ট (সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ) আপিল বিভাগের দেওয়া নীতিমালা অনুসরণে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা কেবল এটাই বলছি, হাইকোর্ট বিভাগের ওই দ্বৈত বেঞ্চ পরিহাসমূলক (প্যারাডক্সিকাল) আগাম জামিনের আদেশ দিয়েছেন।

রায়ে বলা হয়, আগাম জামিন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের বিবেচনা খুবই বিস্তৃত। এটা অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত যে, আইনি নীতির ভিত্তিতে বিচারিক বিচক্ষণতা বেষ্টিত হবে এবং স্বেচ্ছাচারী বিবেচনার ওপর ভর করে হবে না। অবশ্যই এজাহারের খুঁটিনাটি বিষয়ে বিচারকের চিন্তায় এবং আদেশে তার প্রতিফলন থাকবে যে, তারা ঘটনাটি (ফ্যাক্ট) ও অভিযোগসমূহ সর্বতোভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন।

রায়ে আরও বলা হয়, কখনও কখনও কোনো আবেদনকারীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ধরণ গুরুতর হলে গ্রেফতার পূর্ব জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা জরুরি। কারণ, আদালত সব সময় এই অন্তদর্শন লালন করেন যে, শেষ পর্যন্তও যেন অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। নইলে সভ্য সমাজের গঠন ভেঙে যাবে। বিচারক কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্তের ও সামগ্রিকভাবে সমাজের স্বার্থের বিষয়ে অচেতন থাকতে পারেন না। অভিযুক্তের জামিনের কারণে তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন ক্ষেত্রে আগাম জামিন প্রদানের আগে অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

আপিল বিভাগ মনে করেন, গ্রেফতার পূর্ব জামিন একটি অসাধারণ প্রতিকার এবং অসাধারণ ও ব্যতিক্রমী কোনো পরিস্থিতিতেই কেবল যথাযথ ও বিচারবুদ্ধিতার বোধগম্য চর্চার মাধ্যমেই আগাম জামিন মঞ্জুর করা যেতে পারে। আপিল বিভাগের সর্বশেষ রায়ে বলা হয়েছে, প্রত্যাশিত শ্রম দিয়ে হাইকোর্টকে অবশ্যই এজাহারের ঘটনা খুঁটিয়ে দেখতে হবে। অভিযোগের ধরণ যদি জঘন্য হয়, তবে অবশ্যই আগাম জামিন মঞ্জুর করা যাবে না।

রায়ে আরও বলা হয়, কারও জন্য বিবেচনার দরজা খুলতে তাদের (বিচারক) এই মর্মে সন্তুষ্ট হতে হবে যে, গড়পড়তা দাবির ওপর বিশ্বাস না করে সুনির্দিষ্ট, স্পষ্ট, যৌক্তিক, বিশ্বাসযোগ্য কারণ এবং যথেষ্ট ব্যাখ্যাসহ সিদ্ধান্তটি নেওয়া হচ্ছে।

এফএইচ/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।