৯৫ শতাংশ ফার্মেসিতেই পাওয়া গেল মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ
রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ সেবন করা হয়। যদি হয় মেয়াদহীন ওষুধ; নিরাময় নয়, হবে মরণ। এমনই মরণ ফাঁদে ফেলছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। বাড়তি মুনাফালোভীরা বিক্রি করছেন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে দেশবাসী।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান চালায়। এদিন ২১টি ফার্মেসিতে অভিযান চালায় অধিদফতর। এর মধ্যে ২০টিতেই পাওয়া যায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। অর্থাৎ একদিনের অভিযানে ৯৫ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানে পাওয়া গেল মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।
এ বিষয়ে অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (উপসচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জাগো নিউজকে বলেন, রোগ নিরাময়ের জন্য মানুষ ওষুধ সেবন করে। কিন্তু অধিদফতরের অভিযানে দেখা গেছে ভয়াবহ চিত্র। রাজধানীর বেশিরভাগ ফার্মেসিতে বিক্রি করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। প্রতিষ্ঠানগুলো আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রমরমা বাণিজ্য করছে। এ ওষুধ সেবনে বিপুলসংখ্যক রোগী নিরাময়ের বদলে স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতার শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান আইন লঙ্ঘন করে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভোক্তা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই একাধিক টিম রাজধানীতে অভিযান চালাচ্ছে। জেলার অফিসগুলোকেও বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অভিযানে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাসহ সিলগালা করা হচ্ছে।
ভোক্তা অধিদফতরের এ উপ-পরিচালক বলেন, আজ রাজধানীর ধানমন্ডি, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা এলাকায় ২১টি ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে ২০টিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে তার প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন অঙ্কের মোট তিন লাখ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে যেসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হলো-
বাড্ডার সাতারকুল এলাকার মারিয়া ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা, হ্যাপি মেডিকেল হলকে ৫ হাজার, লিভা ফার্মেসিকে ৩০ হাজার, তাকওয়া ফার্মেসিকে ১০ হাজার এবং হোসনিয়ারা ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ধানমন্ডি, কলাবাগান ও মোহাম্মদপুর এলাকার তাহিম ফার্মাকে ২৫ হাজার টাকা, ড্রাগ ফার্মাকে ২০ হাজার, মেসার্স ঠাকুরগাঁও ফার্মাকে ২০ হাজার, আল মদিনা ফার্মাকে ১৫ হাজার, এস ফার্মাকে ৩০ হাজার, আল রাজি ফার্মাকে ৫ হাজার, মেডিসিন ওয়ার্ল্ডকে ২৫ হাজার, বিল্লাহ ফার্মাকে ১৫ হাজার, ডে নাইটকে ১২ হাজার, এইচ আর ফার্মাকে ১০ হাজার, ঠাকুরগাঁও মডেল ফার্মাকে ২০ হাজার, যমুনা ফার্মাকে ১৫ হাজার, ডিসেন্ট ফার্মাকে ১৫ হাজার, এন এস ফার্মাকে ১৫ হাজার, মেডিসিন ফার্মাকে ১৫ হাজার, লিভা ফার্মেসিকে ৩০ হাজার, তাকওয়া ফার্মেসিকে ১০ হাজার এবং হোসনিয়ারা ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের ঢাকা জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা, ফাহমিনা আক্তার, রজবী নাহার রজনী ও জান্নাতুল ফেরদাউস। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন বাড্ডা থানা পুলিশ ও এপিবিএন-১ এর সদস্যরা।
এসআই/জেডএ/এমএস