প্রধানমন্ত্রী জানেন, কোন প্রাঙ্গণে কয়টা জিপ ঘাসে ঢেকে আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩১ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৯

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘একটি বিষয় নজরে এসেছে। যখন প্রকল্প শেষ হয়ে যায়, তখন কে কোথায় যায় কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যায় না। গাড়ি কোথায় যায়, অফিস কী হয়, ম্যাপ, যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার– এগুলো প্রায়ই দেখা যাচ্ছে খুঁজে পাওয়া যায় না। এগুলোকে অবশ্যই যেখানে সারেন্ডার করার কথা, সেখানে সারেন্ডার করতে হবে।’

মঙ্গলবার বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। সভায় প্রধানমন্ত্রী ও এনইসির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এটা নতুন কোনো অর্ডার নয়। আমি জানি, এটা আগেও ছিল। আর এই সম্পর্কে সরকার খুবই সচেতন। প্রধানমন্ত্রী জানেন, কোন অফিসের প্রাঙ্গণে কয়টা জিপ পড়ে আছে এবং ঘাসে ঢেকে গেছে। সেই খবর উনার কাছে আছে। সুতরাং এটা আমাদের পরিহার করা প্রয়োজন।’

দেশের বাইরে থেকে প্রকল্পের জন্য বিশেষজ্ঞ কিংবা কনসালটেন্ট না এনে দেশের অবসারপ্রাপ্ত টেকনিক্যাল ব্যক্তিদের এসব ক্ষেত্রে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এক্সপার্ট, কনসালটেন্ট যতটুকু সম্ভব নিজেদের দেশের অভ্যন্তর থেকে নিতে হবে। আমাদের অনেক অবসরপ্রাপ্ত টেকনিক্যাল লোক বসে আছে। যারা অনেক বছর কাজ করেছে, ভালো অভিজ্ঞতা আছে। তাদেরকে আমরা সাময়িক ভিত্তিতে কাজ দিতে পারি। এ তো অন্যায় কিছু নয়। পানিতে পানির ইঞ্জিনিয়ার, সড়কে সড়কের ইঞ্জিনিয়ার– এভাবে। তাদেরকে দিয়ে যদি আমাদের কাজ হয়, তাহলে অন্য জায়গা থেকে আমাদের এক্সপার্ট বা কনসালটেন্ট আনার দরকার নেই। এ দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি ব্যাপার আমাদের নজরে এসেছে। প্রত্যেকটি প্রকল্প শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে প্রজেক্ট কমপ্লিশন রিপোর্ট (পিসিআর) দেয় না অনেকে। এখানে গাফিলতি আছে। এটা ঠিক নয়। এটাকে আবার জোরদার করতে হবে। সচিব মহোদয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট না দেয়ার প্রবণতা এই আমলাতন্ত্রে প্রচুর আছে। এটাকে ঝালাই করতে হবে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘আইএমইডি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তিনি মনে করেন, আমাদের অর্থনীতির বর্তমান যে আকার, বহর আইএমইডির পক্ষে এটা পুরোপুরি তদারকি করা ফিজিক্যালি, অর্থনৈতিকভাবে, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে, কারিগরিভাবে তারা নট আপ টু ডেট লেভেল (উপযুক্ত নয়)। আরও বেশি লোক দরকার। ফিল্ডে তাদের অ্যাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক বিভাগে আমরা একটা করে আইএমইডির অফিস করব। সেখানে তাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরি থাকবে, প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের লোকবল, যন্ত্রবল, গাড়িবল ইত্যাদিও বাড়ানো হবে।’

‘প্রধানমন্ত্রী আরেকটি অর্ডার দিয়েছেন যে, জেলা ও উপজেলাভিত্তিক যেন মাস্টারপ্লান থাকে। প্রকল্পের যে আপটু ডেট ম্যাপ থাকে। প্রতি বছর যখন প্রকল্প করি, তখন ওই ম্যাপের সঙ্গে যেন মিলিয়ে করি’, বলেন এম এ মান্নান।

প্রকল্প করার সময় ফসলি জমি, নদী, জলাশয় এড়িয়ে যাওয়ার জন্যও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি স্থাপনা নির্মাণের সময় যেন ভূমিকম্প, বজ্রপাত, বন্যা নানা ধরনের বিষয় মাথায় রেখে তা নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া এক প্রকল্পে একাধিক পরিচালক থাকতে পারবেন না এবং প্রকল্প পরিচালককে প্রকল্পের এলাকায় থাকতে হবে, এই নির্দেশনা আবারও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ডিপিপির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘নকশা করি বা ডিপিপি তৈরি করি, পঞ্চগড়ের কোনো বিষয়ের ওপর যে ডিপিপি তৈরি করা হবে, খাগড়াছড়িতে একই মাপের হবে না। কারণ, পানি জল হাওয়া বা পরিপ্রেক্ষিত দুই জায়গার ভিন্ন। মূলকথা হলো, কার্বনকপি (নকল) ডিপিপি যেন হয় না। ডিপিপি হতে হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তার নিজস্ব রূপে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশের এলাকাগুলোকে জোনিং করতে বলেছেন। শিল্প এলাকা, শিক্ষা এলাকা, বসবাস এলাকা এগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য বলেছেন।

পিডি/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।