৫৭ ও ৮৬ ধারা নিয়ে ইউনুছের রিট খারিজ


প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিল চেয়ে দায়ের করা আইনজীবী ইউনুছ আলীর রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো: সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি অপরিপক্ক বলে খারিজ করে দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

পরে ইউনুছ আলী সাংবাদিকদের জানান, শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন এ আইন নিয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সুতরাং এ অবস্থায় রিটটি ‘অপরিপক্ক’। তাই আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ইউনুস আলী আকন্দ রিটটি দায়ের করেন। গত বুধবার ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিল চেয়ে সরকারের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি।

নোটিশের জবাব দিতে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব এবং তথ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।

নোটিশে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ও ৮৬ ধারাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী শিশির মনিরের দায়ের করা রিটের শুনানির জন্য পরবর্তী দিন সোমবার ধার্য করেছেন আদালত। রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আজ আাদলতের শুনানিতে অংশ নেন আবেদনকারীর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।

তিনি বলেন, আজ মামলার ওপর শুনানি শুরু হলে আমরা আংশিক শুনানি করেছি। সোমবার দুপুরের পর পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন।

এর আগে  গত ২৬ আগস্ট বুধবার বিকেলে  এ আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে জামিনে থাকা জাকির হোসেনের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী শিশির মনির। রিটে বিবাদী করা হয়েছে আইন সচিব ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ কারাদণ্ড ১৪ বছর ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। অথচ একই অভিযোগে পর্নগ্রাফি আইনে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে। এটি সরাসরি বৈষম্য। আইনের এ ধারাটি সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২ এবং ৩৯ ধারার পরিপন্থী।

আইসিটি আইনের ৫৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানী প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ’।

(২) ‘কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন’।

এছাড়া ৮৬ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কার্যের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকার, নিয়ন্ত্রক, উপ-নিয়ন্ত্রক, সহকারী নিয়ন্ত্রক বা তাহাদের পক্ষে কার্যরত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন প্রকার আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।

# ৫৭ ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি সোমবার

এফএইচ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।