ওহি নাজিলের ধরণ ও পদ্ধতি


প্রকাশিত: ০৬:২৩ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

মহান আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে পৃথিবীতে অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন মানবজাতির হেদায়েতের জন্য। এ নবী-রাসূলদের নিকট দিক-নির্দেশনা নিয়ে আসতেন ফিরিশতা জিব্রিল আলাইহিস সালাম। তিনি আল্লাহর তরফ থেকে যা নিয়ে আসতেন তাই ওহি। এই ওহি নাজিল করে তার পয়গামের কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লামের নিকটও ওহি নিয়ে আসতেন হজরত জিব্রিল আলাইহিস সরঅম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের ওফাতের পরপরই ওহির দ্বার চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। এ ওহির ধরন কেমন ছিল কোন পদ্ধতিতে ওহি নাজিল হতো জাগো নিউজে তা তুলে ধরা হলো-

ওহির ধরণ
আল্লাহ তাআলা দুই ধরনের আহকাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পাঠাতেন। প্রথম প্রকারের ওহিতে আল্লাহ পাকের নিজস্ব শব্দ থাকতো এবং দ্বিতীয় প্রকার হলো, যে সব ওহিতে আল্লাহ তাআলার নিজস্ব শব্দ থাকতো না বটে, বিষয়বস্তু আল্লাহপাকের হোতা এবং জিব্রিল আলাইহিস সালাম নিজস্ব শব্দের দ্বারা তা ব্যক্ত করতেন। প্রথম প্রকারকে ‘কুরআন’ বলা হয়। আর দ্বিতীয় প্রকার হলো ‘সুন্নাতে রাসূল’। অবশ্য দু’প্রকার ওহিই আল্লাহর তরফ থেকে নাজিল হয়েছে এবং হজরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র কণ্ঠ থেকে নিঃসৃত হয়েছে।

যেভাবে ওহি আসতো
১. ঘণ্টার শব্দের মতো : প্রথমে  ঘণ্টার  শব্দ আসতে থাকতো। এমন সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র দেহের বর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যেত, তীব্র শীতের সময়ও ঘর্মাক্ত হয়ে পড়তেন।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এ অবস্থাটি যখন হতো তখন তাঁর হাত মোবারক যদি আমার উরুতে স্থাপন করা থাকতো তাহলে মনে হতো, উরূ ফেটে যাবে; তিনি আরোহী অবস্থায় থাকলে শক্তিশালী উষ্ট্রও ওহির ভার বহন করতে না পেরে বসে পড়তো। আলেমগণ বলেন, এ অবস্থায় ওহি নাজিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য বড় কষ্টকর ছিল। সাধারণত যখন আজাব,গজব, ধমক এবং ক্রোধের আয়াত নাজিল হতো তখন এই অবস্থাটি ঘটতো।

২. হজরত জিব্রিল আলাইহিস সালাম অন্তরে কথা রেখে দিতেন।

৩. হজর জিব্রিল আলাইহিস সালাম মানুষের বেশে তশরিফ আনতেন এবং আল্লাহর হুকুম বলে যেতেন। এটি ছিল সহজ পদ্ধতি। অধিকাংশ সময় হজরত দাহিয়াতুল কালবি রাদিয়াল্লাহু আনহুর আকৃতিতে জিব্রিল আলাইহিস সালাম তশরিফ আনতেন।

৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমন্ত থাকাবস্থায় হজরত জিব্রিল আলাইহিস সালাম আসতেন এবং আল্লাহর পয়গাম পৌছে দিয়ে চলে যেতেন, যেমন সূরা কাউছার।

৫. আল্লাহ তাআলা সরাসরি কথা বলতেন, যেমন শবে মি’রাজের সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত নাজিল করেছেন। আর এভাবেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত ব্যক্তির শোচনীয় পরিণামের ঘোষণা এসেছে।

৬. নিদ্রিত অবস্থায় আল্লাহ তাআলা ওহি নাজিল করেছেন। ওলামায়ে কেরামগণের মতামত হলো- কুরআনে নিদ্রিতাবস্থায় নাজিলকৃত ওহি নেই। হাদিসের এমন ওহির উদাহরণ রয়েছে।

পরিশেষে...
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়্যত প্রাপ্তির পর ওহি গ্রহণ থেকে শুরু করে এর বাস্তবায়ন কালীন সময় ও তাঁর ওফাত পর্যন্ত আনিত বিধান এই জমিনে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেগেছেন। দ্বীনের বিধান পরিপূর্ণ করেগেছেন। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বান্দাকে ওহির বরকত, মহত্ম্য বিধান ইহকালীন জিন্দেগিতে বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।

অবলম্বনে : তফসিরে নূরুল কুরআন

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।