পলাশের পিস্তলটি ছিল খেলনা!

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৯

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদের কাছ থেকে উদ্ধার করা পিস্তলটি খেলনা ছিল। বুধবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আকতার গণমাধ্যমকে বলেন, আসল পিস্তলের মত দেখালেও, বাস্তবে এটি খেলনা। পিস্তলটির ম্যাগাজিন আলাদা করা যায়। ভেতরে গুলির মত করে ছোট ছোট প্লাস্টিকের দানা রাখা যায়। এছাড়া অল্প শব্দও হয় এই পিস্তলে।

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করে সিআইডি। এর আগে গত ৭ মার্চ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ তাদের ব্যালিস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া জানান, ব্যালিস্টিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এটি একটি খেলনা পিস্তল। সেখানে বারুদ ব্যবহার বা গুলি করার কোনো সুযোগ নেই। ওই পিস্তলের গায়ে ইংরেজিতে লেখা ছিল- গান সিরিজ ওসাকা, আমান ইন্ডাস্ট্রিজ, মেইড ইন বাংলাদেশ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ১৪৮ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ময়ূরপঙ্ক্ষী উড়োজাহাজটি। চট্টগ্রাম হয়ে রাতেই দুবাই পৌঁছানোর কথা ছিল উড়োজাহাজটির।

কিন্তু নির্ধারিত যাত্রাবিরতিতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই ফ্লাইট বিজি-১৪৭ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে যায়।কর্তৃপক্ষ জানায়, অস্ত্রধারী এক যুবক বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযানে সংকটের অবসান ঘটে। সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, পিস্তলধারী ওই যুবক নিহত হয়েছেন। আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করে পরদিন র‌্যাব জানায়, ওই যুবকের নাম পলাশ আহমেদ, বাড়ি নারায়ণগঞ্জ।

ওই বিমানের দুই যাত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ছিনতাইকারী পিস্তল উঁচিয়ে যাত্রীদের হুমকি দিচ্ছিলেন। গুলির শব্দও তারা শুনেছেন। তবে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মাহবুবার রহমান সেই রাতেই বলেছিলেন, পিস্তলটি ছিল খেলনা।

পরে পতেঙ্গা থানায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) করা মামলার এজাহারে বলা হয়, একজন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী (পলাশ) দৌড় দিয়ে বিমানের সামনের ককপিটে ঢোকার চেষ্টা করে। তার হাতে বোমা ও অস্ত্র সদৃশ বস্তু দেখা যায়।

ওই উক্ত দুষ্কৃতকারী তার কিছু দাবি প্রধানমন্ত্রীকে শুনতে হবে বলে চিৎকার করে। অন্যথায় সে বিমানটি তার কাছে থাকা বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে দেবে মর্মে হুমকি দেয়। ওই সময় সে দুটি ফটকা (পটকা) জাতীয় বস্তুর বিস্ফোরণ ঘটায়।

নিহত পলাশ চিত্রনায়িকা শিমলার স্বামী ছিলেন। সাড়ে ৩ মাস আগে শিমলা তাকে তালাক দেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, পলাশের হাতের অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল ছিল। এরপর এটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়।

আরএম/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।