বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিষয়ে ড. ফরাসউদ্দিনের একক বক্তৃতা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৪ পিএম, ০৭ মার্চ ২০১৯

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের বার্ষিকীতে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে একক বক্তৃতা প্রদান করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ : ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ১৯৭১-এ প্রদত্ত ১৮ মিনিটের ভাষণটি তার স্বভাবসুলভ তাৎক্ষণিক বক্তব্য ছিল, পূর্বে তৈরি করা বক্তৃতা নয়। এটিকে অনেকেই রাজনীতির কবিতা বলে থাকেন। তুলনা করা হয় আব্রাহাম লিংকন, উইনস্টন চার্চিল, মার্টিন লুথার কিং ও পেরিক্লিসের মহতী যুগান্তকারী ভাষণগুলোর সাথে। এর মহত্ত্ব ও বিরাটত্বের কারণে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অসাধারণ ভাষণটিকে পৃথিবীর অন্যতম ‘ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ভাষণটির অসাধারণত্ব, এর স্বতঃস্ফূর্ততা, নির্ভীকতা, সম্যক উপলব্ধি ও তেজস্বী উচ্চারণ প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জনগণের প্রথমবারের মতো স্বাধীনতার চরম ও পরম আকাঙক্ষাকে ব্যাঙ্গময় করে তোলে। ভাষণটি অবশ্যই বহুমাত্রিক গুরুগম্ভীর ও ওজনদার, প্রকৃতপক্ষে বাঙালি ও শেখ মুজিবের স্বপ্নসাধনার স্বাধীনতা ও মুক্তির সুস্পষ্ট উচ্চারণ এটি। সামগ্রিক বিচারে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি স্বাধীনতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে, চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা অর্জনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে, প্রকাশ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের রূপরেখা, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা এবং কল্যাণরাষ্ট্রে বিশেষ করে কম ভাগ্যবানদের অর্থনৈতিক মুক্তিসহ সোনার বাংলা গড়ে তোলা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর বলিষ্ঠ প্রত্যয় আছে এ ভাষণের বাক্যগুলোর অন্তরে অন্তরে।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ৭ মার্চের সংক্ষিপ্ত ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ইতিহাস ও সমকালীন রাজনীতির বিশ্বস্ত ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। মৌখিক এই ভাষণ যারাই শুনেছেন, তারাই এর অসামান্য মর্ম উপলব্ধি করেছেন। সঙ্গত কারণেই এ ভাষণ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ৭ মার্চ ১৯৭১ থেকে ৭ মার্চ ২০১৯ এই পরিক্রমায় বাঙালি জাতিসত্তা, ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি যে পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে তার মূলে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য ঐতিহাসিক অবদান। অনন্তকাল ধরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ভাষণ বাংলার মানুষের সার্বিক মুক্তির সনদ এবং বিকাশের সূত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. এম সাইদুজ্জামান, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক, কবি কাজী রোজী, কবি রুবী রহমান, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, কবি কামাল চৌধুরী, কবি হারিসুল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক সায়েরা হাবীব।

এএসএস/এমবিআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।