কন্দালের উন্নয়নে খরচ হচ্ছে দেড়শ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৩ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৯

ধান ও গমের পরেই দেশের কৃষিতে কন্দাল জাতীয় ফসলের অবস্থান। আলু, মিষ্টি আলু, ওলকচু, মুখীকচু, পানিকচু, লতিকচু, কাসাভা, গাছ আলুসহ অন্যান্য কন্দাল জাতীয় ফসলের উন্নয়নে ১৫৬ কোটি ৩১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা খরচ করবে সরকার। ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ খরচ করা হবে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদনও দেয়া হয়েছে। এর আওতায় ২৮ হাজার ৪৪০টি আলু ও কচু উৎপাদন প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে। নির্মাণ করা হবে ১৫০টি বীজ সংরক্ষণাগার।

এ ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় ৬৯৮১ ব্যাচ কর্মকর্তা-কর্মচারী, কৃষক, স্টেকহোল্ডার প্রশিক্ষণ দেয়া, ২ হাজার ৮৪৪টি কৃষক মাঠ দিবস, ৪৫০ ব্যাচ উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ এবং ৩০০টি কৃষিমেলা আয়োজন করা হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

কন্দাল ফসল চাষের উপযোগী মাটি, জলবায়ু ও চাষের চাহিদার ওপর ভিত্তিতে দেশের আট বিভাগের ৬০ জেলার ১৫০টি উপজেলাকে এই প্রকল্পের এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘গ্রামীণ, নিম্ন আয়ের মানুষজন কন্দাল জাতীয় ফসল বেশি ফলায় বা খায় বা ব্যবহার করে। আমাদের সরকারের সবকিছুর কেন্দ্রে জনগণ। জনগণের মধ্যে নিম্ন আয়ের জনগণ, নিম্ন-আয়ের মধ্যে গ্রামীণ জনগণ-এভাবে যদি আপনারা স্তরে স্তরে যান, তাহলে এটা তাদেরকেই অ্যাড্রেস করে। আলু তো আমরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করি। অনেক কন্দাল জাতীয় ফসেল আছে, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। সেগুলোকে বাণিজ্যিক করতে ও উন্নয়ন করতে আমরা এই প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’

প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বর্ণনা করে প্রকল্প সূত্র বলছে, এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে কন্দাল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের বর্ধিত জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুষ্টিমান উন্নয়ন করা। প্রকল্প এলাকায় কন্দাল ফসলের আবাদ বাড়ানো, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত আলু, মিষ্টিআলু, গুলকচু, মুখীকচু, পানিকচু, লতিকচু, কাসাভা ও গাছ আলুর প্রমাণিত জাতগুলো সম্প্রসারণ করা।

এ ছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত ও সিডর-আক্রান্ত এলাকায় প্রশিক্ষণ, উদ্বুদ্ধকরণ, প্রদর্শনী কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃষ্টি করা। উন্নত জাতের মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিদেশে কন্দাল ফসল রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের কৃষিতে আলু, মিষ্টি আলু, ওলকচু, মুখীকচু, পানিকচু, লতিকচু, কাসাভা ও গাছ আলুসহ অন্যান্য কন্দাল ফসল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ধান ও গমের পরই তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আলু। আলু ও মিষ্টি আলুর ফলন কম হওয়ার প্রধান কারণ হলো মানসম্মত বীজের অপ্রতুলতা ও কোনো কোনো বছর দুষ্প্রাপত্যতা, স্থানীয় জাত ও নিম্নমানের বীজ ব্যবহার, ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণজনিত মহামারি এবং সর্বোপরি বীজের উচ্চ মূল্য। এ অবস্থায় আলুর উৎপাদন বাড়ানো ও হিমাগার স্থাপন খুবই জরুরি।

পিডি/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।