সিলেট আদালতে এক খুনির সরল স্বীকারোক্তি


প্রকাশিত: ০১:৫৪ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৫

আদিবাসী সিএনজি অটোরিকশা চালক শ্রীনন্দ পাত্র (৩০) হত্যায় অংশ নেয় ৪ ছিনতাইকারী। হত্যার পর তারা তার লাশ ফেলে দেয় হাওরে। মূলত সিএনজি চালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই শ্রীনন্দ্র পাত্রের গলায় প্যান্টের বেল পেচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরে ছিনতাইকৃত অটোরিকশায় যাত্রী বেশে লাশ গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দক্ষিণ সুরমার ধামরিয়ার হাওরে লাশটি ফেলে দিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ নিয়ে গিয়ে অটোরিকশাটি বিক্রি করা হয়।

পুলিশের হাতে আটক গোলাপগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের তাজনীন আহমদ রুবেল শুক্রবার বিকেলে সিলেট মহানগর হাকিম আদালত ১ এর বিচারক সাহেদুল করিমের কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায়।

রুবেল নিজে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি অংশ নেয় জানিয়ে বলে, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ছিনতাই করার পর ১৯ আগস্ট গভীররাতে শ্রীনন্দ তাদের চিনে ফেলতে পারে এই ভয় থেকে সেসহ ৪জন মিলে চালক শ্রীনন্দ্রকে হত্যা করে। এরপর তার লাশ মোগলাবাজার ও গোলাপগঞ্জ থানার মধ্যবর্তী দামরিয়ার হাওরে ফেলে দেয় বলে আদালতকে জানায়।

স্বীকারোক্তির মুলক জবানবন্দীর কথা নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানা পুলিশের ওসি তদন্ত মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, চারজন ছিনতাইকারী মিলে শ্রীনন্দ্র পাত্রকে হত্যা করে বলে আদালতকে জানিয়েছে রুবেল। বিকেল চারটা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টানা আড়াইঘণ্টার জবানবন্দীতে রুবেল অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্যই এর চালককে হত্যা করা হয় বলে জানায়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবার নাম পরিচয়সহ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে চান না মামলার তদন্তকারী এই কর্মকর্তা।  

প্রসঙ্গত, ১৯ আগস্ট রাতে বাড়িতে ফেরার পথে খাদিম সুরমা বাইপাস হতে সিএনজি অটোরিকশাসহ আদিবাসী যুবক শ্রীনন্দ ছিনতাইয়ের শিকার হন। নিখোঁজ হওয়ার ৮ দিন পর বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের মানিকপুর দামরিয়ার হাওর থেকে শ্রীনন্দ পাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিখোঁজের আটদিন পর গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে এঘটনায় তানজিন আহমদ রুবেলকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া হতে আটক করে শাহপরান থানা পুলিশ। এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ওই হাওর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শ্রীনন্দের লাশ উদ্ধার করা হয়। রুবেল গোলাপগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। রুবেলের দেয়া তথ্য মতে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে শ্রীনন্দ’র অটোরিকশাটি উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় সিএনজি অটোরিকশা ক্রয় করার দায়ে ৩জনকে আটক করে পুলিশ। একই সাথে রুবেল এর কাছ থেকে খুন হওয়া শ্রীনন্দ’র মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, ছয় ভাই-বোনের মধ্যে শ্রীনন্দ পাত্র ছিলেন তৃতীয়। নিজের কেনা অটোরিকশাটি এক বছর ধরে চালিয়ে পরিবারের জন্যে আয়-রোজগার করছিলেন তিনি।

সূত্র জানায়, নিখোঁজের দিন রাত ৯টায় সর্বশেষ পরিবারের সাথে মোবাইলফোনে কথা হয় তার। ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, বিছনাকান্দিতে আছেন। এরপর পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

ছামির মাহমুদ/এমএএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।