যানজট জলজটে তীব্র ভোগান্তি
রাজধানীতে বুধবার দুপুরের পর থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় নগরবাসীকে পোহাতে হয় তীব্র ভোগান্তি।
গুলশানে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জিগাতলার বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, বৃষ্টির কারণে আজ অফিস থেকে বের হতে সন্ধ্যা ৭টা বেজে যায়। যানজটের কারণে গুলশান-১ নম্বর থেকে জিগাতলা পর্যন্ত পৌঁছতে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে।
আরেক যাত্রী বাচ্চু মিয়া বলেন, সন্ধ্যায় মতিঝিল থেকে বাসে রওনা দিয়ে মিরপুর যেতে সময় লেগেছে চার ঘণ্টা।
এমনিভাবে রাজধানীর প্রতিটি রুটে তীব্র যানজট ও জলজটে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাতিলঝিলের রাস্তায় সাধারণত যানজট হয় না। কিন্তু বুধবার মগবাজার ও এফডিসি রোডের মাথা থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন রুটে যানজট ছিল।
বুধবার ভোর থেকে রাজধানীতে ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। সকালে অনেককেই গণপরিবহনসহ যানবাহনের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর কেউ কেউ গাড়িতে উঠতে পারলেও উপায় না দেখে অনেকেই পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। এদিকে সকালের বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।
বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। এরপর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। ফলে অফিস ফেরত মানুষ ফের ভোগান্তিতে পড়েন। সারাদিন বৃষ্টির কারণে গণপরিবহনের সংখ্যা রাতে আরও কমে যায়। একদিকে যানবাহন সংকট অন্যদিকে পানি জমে যাওয়ায় ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে।
জিগাতলা, ট্যানারি মোড়, সিদ্ধেশ্বরী, বেইলি রোড, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কল্যাণপুর, কুড়িল বিশ্বরোড, পোস্তগোলা, জুরাইন, দোলাইপাড়, ওয়ারী, গুলিস্তান, বাড্ডা, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় পানি জমে যায়। এতে যানবাহনের গতিও কমে যায়। ফলে যানজট ও জলজটে নাকাল হয়ে পড়ে রাজধানীবাসী।
এদিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। কর্মকর্তারা বলেন, ‘পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে আকাশে বজ্রমেঘের সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
এছাড়া আবহাওয়ার ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়, বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধির কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এফএইচএস/বিএ