বিশ্বে সর্বোচ্চ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারী দেশ বাংলাদেশ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হলেও ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয় কী, সে সম্পর্কে বাংলাদেশই পৃথিবীকে পথ দেখিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বোচ্চ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারী দেশ। বর্তমানে দেশে ৫০ লাখ সোলার প্যানেল ব্যবহৃত হচ্ছে যা চীন, ভারত কিংবা পৃথিবীর বড় কোনো দেশে নেই। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এটি পরিবেশ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পদক।
মঙ্গলবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (সিজিআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনে গণমাধ্যমে ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার, এর জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলো। এর ঝুঁকি মোকাবেলায় সবাইকে একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বিশ্ব সম্প্রদায় প্যারিস চুক্তির আলোকে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল এখনও সে ধরনের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য এখনও পর্যন্ত যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা কার্যকর হলে তাপমাত্রা শিল্প বিপ্লবের আগের তুলনায় আরও সাড়ে তিন ডিগ্রি বাড়বে।
তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তির আলোকে পৃথিবীর তাপমাত্রা শিল্প বিপ্লবের আগের তাপমাত্রার তুলনায় মাত্র ২ ডিগ্রি বাড়ার কথা বলা হয়েছে। ২ ডিগ্রির বেশি যেন না বাড়ে সেভাবে কাজ করব আমরা। ইতোমধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জাতির যেকোনো প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীকার আদায়, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পরবর্তী প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাদের ভূমিকা অপরিসীম।
মন্ত্রী বলেন, জলাবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্বের উন্নয়ন একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। এ দুর্যোগ মোকাবেলায়ও শুধু ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামই নয়, সব গণমাধ্যমকর্মীরা ভূমিকা পালন করতে পারে।
হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনেক রাষ্ট্রের তুলনায় এগিয়ে। বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ যারা এ ধরনের পরিকল্পনা তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে মাত্র দু-একটি দেশ করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পিআইবির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া পিআইডিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয় যে প্রচার প্রচারণা রয়েছে সেগুলোতে গণমাধ্যমকর্মীদের কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা ভেবে দেখা হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু জলবায়ু পরিবর্তনই ইস্যুই নয়, দেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পরিবেশ সচেতন করা, পরিবেশ সচেতনতা যদি স্কুল থেকে তৈরি হয় তাহলে পরিবেশ ভালো থাকবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশে বাচ্চারা রাস্তায় কোনো কাগজ ফেলে না কিন্তু আমাদের দেশে অনেক শিক্ষিত ও বিত্তবান মানুষ সচেতনতার অভাবে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ সচেতনতা তৈরিতে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সিজিআরএফ সভাপতি কাওসার রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হক প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইনের গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমইউ/জেএইচ/এমএস