সরকারি আইন কর্মকর্তার ৩০ শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ
সরকারি মামলা পরিচালনার জন্য ৩০ শতাংশ প্রসিকিউটর (সরকারি আইন কর্মকর্তা) জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জনিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের ২৫ সেপ্টেম্বরকে ‘বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ডে’র ঘোষণাপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস করার কথা চিন্তা করছি এবং খুব সিরিয়াসলি চিন্তা করছি। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যেন রিক্রুটমেন্টটা তাদের মাধ্যমে হয়, সেই ব্যবস্থা করছি।’
তিনি বলেন, ‘তবে সবটা প্রসিকিউশন সার্ভিস ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস হিসেবে করাটা প্র্যাকটিক্যাল হবে না। সে জন্য অন্ততপক্ষে ৩০ শতাংশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস এবং ৭০ শতাংশ পলিটিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট, আমরা এভাবে শুরু করতে চাই। তারপর সাকসেসের ওপর নির্ভর করবে ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিসের পার্সেন্টেজটা আরও বৃদ্ধি করা হবে কি না।’
আনিসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন যেভাবে বিজ্ঞ বিচারক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেন, ঠিক সেভাবেই প্রসিকিউটর নিয়োগের জন্য একটি পরীক্ষা নেয়ার প্রথা চালু করব।’
এটা কবে নাগাদ শুরু করবেন -জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা প্রসেসের মধ্যে আছি। আমি এই মুহূর্তে কোনো সময় বেঁধে দিতে পারব না। গত টার্মে আমরা নানাবিধ অসুবিধার জন্য এটা কার্যকর করতে পারিনি।’
পাবলিক প্রসিকিউটরদের বেতন বাড়ানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘একজন পাবলিক প্রসিকিউটর যার উপর একটা জেলার উল্লেখযোগ্য ও স্পর্শকাতর মামলাগুলো ন্যস্ত করা হয়, যার দায়িত্বে থাকে তাকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা দেয়া হয়। সেটা তুলতে কিন্তু আমার ৩০০ টাকা খরচ হয়ে যায়। আর পারিশ্রমিক মনে হয় ৩ হাজার টাকা মাসে। দিস ইজ হোয়াট হি গেটস নাউ।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা যেটা করার চেষ্টা করছি। এই পদগুলোতে যেন অত্যন্ত পরীক্ষিত ও ভালো আইনজীবী পাই -সে জন্য এটাকে একটা স্যালারি স্ট্রাকচারের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রোগ্রামটা প্রোপোজাল হিসেবে গেছে। আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে যাতে এই স্যালারি স্ট্রাকচার কার্যকর করতে পারি সে জন্য যে বাজেট প্রয়োজন, আমাদের হিসাবে বছরে ২৬৭ কোটি টাকা লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তিনি নীতিগতভাবে রাজি হয়েছিলেন। পরে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শুরুতে আমাকে বলেছিলেন, এটা করা অত্যন্ত প্রয়োজন, সে জন্য আমি এটা শুরু করেছিলাম। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। ইনশা আল্লাহ, আমরা চেষ্টায় আছি, জুলাই মাস থেকে এটা শুরু করার। আর বাজেটে এই বরাদ্দ যাতে থাকে সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টায় আছি।’
নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের ২৫ সেপ্টেম্বরকে ‘বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ডে’ হিসেবে ঘোষণাপত্রটি আইনমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন প্রবাসীদের সংগঠন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা।
এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হওয়ার পর বিশ্বে আমাদের যারা প্রবাসী বাঙ্গালি আছেন তারা পরিশ্রম করছেন বাংলাদেশের এসব উল্লেখযোগ্য দিনগুলোকে যাতে বিদেশে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পালন করতে পারেন। আমি মনে করি, আজকের এই অর্জন সারাদেশের জনগণের জন্য একটা বিরাট অর্জন।’
আরএমএম/আরএস/এমকেএইচ/এমএস