রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দুর্ধর্ষ ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চান সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৭ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সরকার নিয়োগ দিয়ে আপনাদের হাতে দায়িত্ব অর্পন করেছে। বেশি কিছু না, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব। যদি সেই দায়িত্ব বিন্দুমাত্র পালন করতে না পারেন, তাহলে এর কোনো অর্থ হয় না। আপনি অযোগ্য, অপদার্থ।

সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই প্রত্যেককেই এক একজন দুর্ধর্ষ ব্যক্তি হিসেবে। ভয়ঙ্কর ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চাই। যেই হোক না কেন, আপনাকে দেখলে ভয় পাবে, আতঙ্কিত থাকবে।’

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ইটিআই ভবনে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রশিক্ষণ নিতে আসা চতুর্থ পর্যায়ে নিয়োগ করা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূরুল হুদা বলেন, ‘এখন যদি বলেন, বাপরে-বাপ এ তো খুব প্রভাবশালী, ক্ষমতাশালী তাকে তো কিছু করা যাবে না। তাহলে দয়া করে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে চলে যান। যদি আপনার মনে, আপনার চরিত্রে, ব্যবহারের এ রকম কোথাও কিছু থেকে থাকে, তাহলে যাওয়ার সময় সচিব সাহেবকে গোপনে বলে যাবেন -আমি কিন্তু এই দায়িত্ব পালন করতে পারব না। বাঘা বাঘা লোক রয়ে গেছে, তাদেরকে আমার পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব না।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আপনি বাদ দিয়ে চলে যান। আপনারা যদি সবাই বলেন, দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তাহলে সবাই চলে যান এখান থেকে। গা-ছাড়া অবস্থায়, ঢিলাঢেলা অবস্থায়, হলো কি হলো না -এমন মনোভাব নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করবেন না, দয়া করে।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের হাতে সম্পূর্ণ ক্ষমতা অর্পিত আছে। সেই ক্ষমতাবলে আপনারা অনেক কিছু করতে পারেন। আপনি আপনার উপজেলার নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারেন, একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে দিতে পারেন। একজন যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। তাকে জরিমানা করতে পারেন, জেলে দিতে পারেন। আপনি আর কী চান? একটা নির্বাচন পরিচালনা করার প্রত্যেকটা ক্ষমতা আপনার হাতে আছে। সেই ক্ষমতা যদি প্রয়োগ করতে না পারেন, তাহলে ব্যর্থতা আপনার।’

‘টালবাহানা সুষ্ঠু নির্বাচনের হাতিয়ার নয়’ উল্লেখ করে নূরুল হুদা বলেন, ‘আপনি ব্যর্থ হলেন, আপনাকে শোকজ করা হলো, আপনি তার উত্তর দিলেন। তারপর তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো, তারা গিয়ে দেখলো। এই সমস্ত জিনিস, এই সমস্ত টালবাহানা নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোটেই হাতিয়ার নয়। আমরা এগুলো দেখতে চাই না।’

নূরুল হুদা বলেন, ‘আমরা কি বলেছি কখনও, আপনারা নির্বাচন সুষ্ঠু করবেন না? কোনো একজন প্রার্থীকে জিতিয়ে দেবেন, কোনো একটা দলের দায়িত্ব নিতে হবে -এসব কথা কেউ বলেছে? তাহলে কেন মাথা উঁচু করে দৃঢ়তার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবেন না?’

‘সুতরাং আমার কথা পরিষ্কার, স্পষ্ট। আপনাদেরকে, একেকটা ব্যক্তিকে, একেকটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। যে উপজেলার দায়িত্ব নেবেন, সেই উপজেলায় আপনি একটা প্রতিষ্ঠান। আপনি একজন নির্বাচন কমিশন। আপনি একজন নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন একজন ব্যক্তি। যার দায়বদ্ধতা কেবল সংবিধানের ওপর’, বলেন সিইসি।

পিডি/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।