পুলিশি হেফাজতে তিন ‘ডিজিটাল ভাদাইমা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অশ্লীল শর্টফিল্ম তৈরি করে সেগুলো প্রচার এবং যুব সমাজকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার অভিযোগে ইউটিউব চ্যানেল ডিজিটাল ভাদাইমার সংশ্লিষ্ট তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর থেকে তাদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের মিন্টো রোডের কার্যালয়ে আনা হয়।

এ বিষয়ে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, ভাদাইমা সংক্রান্তে অভিনেতা, চ্যানেলের এডমিন ও মালিকসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের অফিসে আনা হয়েছে। আমরা তাদের অপরাধ খতিয়ে দেখছি।

তিনি আরও বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেটের স্বার্থে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের নাম ও অন্যান্য তথ্যাদি পরবর্তীতে জানানো হবে।

দেশে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্ব ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে নিরাপদ ইন্টারনেট কাম্পেইন। অভিযানে মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সব সাইবার ইউনিট, র‌্যাব, বিটিআরসি, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এ-টু-আই।

এর অংশ হিসেবে সাইবার দুনিয়ায় পরিচিত ও সমালোচিত বিপথে যাওয়া মডেলদের তালিকা তৈরি করে তাদের একে একে এনে কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। রোববার মডেল সানাই মাহবুব সুপ্রভা ও মঙ্গলবার সালমান মুক্তাদিরকে ডেকে কাউন্সিলিং করা হয়।

এ বিষয়ে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারাই ইন্টারনেটকে কলুষিত করবে তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তারকাদের অনেকেই টিকটক ও বিগো লাইভ অ্যাপ ব্যবহার করেন। তারকাসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যারা এসব অ্যাপ ব্যবহার করেন, তাদের অনুরোধ করছি, আপনারা যদি এসব ব্যবহার বন্ধ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ এমনিতে সরে যাবে। এসব অ্যাপ তরুণদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।’

সম্প্রতি ক্যাম্পেইনটি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্বে নিরাপদ ইন্টারনেট ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সালমান মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সালমান সম্প্রতি প্রকাশিত তার খোলামেলা মিউজিক ভিডিও ‘অভদ্র প্রেম’ এর জন্য অনুতপ্ত এবং সে ইতোমধ্যে এই ভিডিও মুছে ফেলেছে। সে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। সে সাইবার ক্রাইম ইউনিটে মুচলেকা দিয়েছে যে কখনো আর এ ধরনের ভিডিও তৈরি এবং বাজারজাতকরণ করবে না। সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ সালমানের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখবে। সালমান তার মুচলেকার বাইরে কিছু করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ ক্যাম্পেইনে অংশ নেয়া একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, পশ্চিম বাংলার কয়েকটি অশ্লীল ইউটিউব চ্যানেলের আদলে বাংলাদেশে কয়েকটি চ্যানেল খুলে সে ধরনের শর্ট ফিল্ম দেখানো হচ্ছে। সেগুলোর লম্বা তালিকা রয়েছে। এছাড়াও যেসব তারকারা লাইভে এসে, নাটকে কিংবা পোস্টে অশ্লীল বার্তা দিচ্ছেন তাদেরকেও জবাবদিহিতা করতে হবে।

এর আগে রোববার ইন্টারনেটে অপেশাদার এবং অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে মডেল সানাই মাহবুব সুপ্রভাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিট। পুলিশের হেফাজতে থেকে নিজের ফেসবুক আইডি দিয়ে লাইভে এসে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চান সানাই।

এআর/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।