১৫ মরদেহ শনাক্তে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

রাজধানীর চকবাজার চুরিহাট্টার আগুনে ৬৭ জনের মধ্যে ৪৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসক। বাকি ২১ মরদেহের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত করতে ১৫ মরদেহের স্বজনরা আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে ২০ স্বজনের রক্ত বাক্কাল টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ।

সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পোড়া মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সময়সাপেক্ষ। স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও স্যামপ্লিং সহজে করা গেলেও নিহতের মরদেহের সঙ্গে ক্রসম্যাচ করা হবে কঠিন। এজন্য ৬ থেকে এক বছরও সময় লেগে যেতে পারে।

শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গের সামনে বুথ বসায় সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৫টি মরদেহের দাবিদার ২০ স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।

এ ব্যাপারে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিএনএ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যানালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজকে স্বজনদের কাছ থেকে যে নমুনা নিয়েছি তা পরীক্ষায় খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। চার সপ্তাহের মধ্যে আমরা তা সম্পন্ন করতে পারব। তবে ঘটনাস্থল থেকে দগ্ধ মরদেহের যেসব নমুনা আমরা সংগ্রহ করেছি তা সময়সাপেক্ষ। একেকটা আলামতের ওপর তা নির্ভর করছে। একেকটার জন্য একেক ধরনের সময়ক্ষেপণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।’

তিনি বলেন, ‘নমুনা হিসেবে আমরা রক্ত ও মুখের ভেতর থেকে বাক্কাল কোষ সংগ্রহ করেছি। এসব ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির বাবা-মা, সন্তান হলে ভালো হয়। আজ ছেলে হলে তার বাবা-মা, বাবা-মা হলে তাদের সন্তান অর্থাৎ রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়দের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

‘আজকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এরপর কালকেও খোলা থাকতে পারে তবে সেটা ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে। বাকিদের কেউ যদি আজকের পর আসেন তারা মালিবাগের সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে যোগাযোগ করতে পারবেন’-যোগ করেন নুসরাত ইয়াসমিন।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনায় ৭০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন। তবে ঢাকা জেলা প্রশাসন জানিয়েছে ৬৭ জন। এদের মধ্যে ৪৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। সঙ্গেহ দাফন বাবদ ২০ হাজার করে টাকা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রাজধানীর চকবাজারে কেমিক্যালের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিকভাবে মত দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।

আজ শুক্রবার সকালে ডিএসসিসির ১১ সদস্যের দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল এসএম জুলফিকার রহমান এ মত দেন।

তিনি বলেন, ‘ভবনের ভেতরে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিল। এটা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এছাড়া আরও অন্যান্য কেমিক্যাল ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে। পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো এখানে। সেই বোতলগুলো ব্লাস্ট হয়ে বোমের মতো কাজ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই কেমিক্যাল ছিল। যা যা ছিল, সেগুলো এক ধরনের কেমিক্যাল। ক্যামিকেলের জন্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে বেশি।’

জেইউ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।