পারিবারিক কলহের জেরে শিশু মানিক হত্যা
পারিবারিক কলেহের জের ধরে প্রথমে অপহরণ করা হয় সাভার বাহারচর এলাকার তিন বছরের শিশু মানিককে। পরে মুক্তিপণের টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণের পুরো টাকা না দেয়ায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় মানিককে।
শিশু মানিককে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।
বুধবার রাতে সাভার থানাধীন হেমায়েতপুরস্থ টেনারি শিল্প এলাকা থেকে মো. আকরাম (৬০) ও মুহাম্মদপুর থানাধীন শ্যামলীর খিলজী রোড একটি বাসা থেকে ভাসানী ওরফে রাজু (৩০)কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা পরিচয়ে বাবা ছেলে।
রাজধানীর মিরপুরে র্যাব-৪ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পরিচালক (সিও) লুৎফুল কবির।
তিনি বলেন, গত ৩০ জুন শিশু মানিককে মো. আকরাম (৬০), মো. মিন্টু (২৮), মো. ভাসানী ওরফে রাজু (৩০), রমজান (৫০), মো. হানিফ (৪০) ও মো. মিলনসহ (২০) অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জন অপহরণ করে। পরে মানিকের বাবা মো. শফিকুল ইসলাম সাভার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১৭৬০) করেন।
১ জুলাই অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা মানিককে অপহরণের কথা স্বীকার করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাবা শফিকুল ইসলাম র্যাব-৪ এর নবীনগর ক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করেন। ৬ জুলাই দুপুরে মানিকের পচা, গলাকাটা লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ৭ জুলাই সাভার থানায় শফিকুল ইসলাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ২৭ জুলাই পুলিশ সন্দেহজনক আসামি মো. রমজান আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে।
র্যাব-৪ সিও বলেন, রমজানের তথ্যের ভিত্তিতে ২৮ জুলাই মিলন (২০) ও হানিফ আলীকে (৪০) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা মানিককে অপহরণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
তারা জানান, পারিবারিক ও জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে। এ বিরোধের জের ধরে রমজানের বড় ছেলে মো. বাবুর (২২) ডানহাতের আঙ্গুল কাটা যাওয়ায় বিদেশ যেতে ব্যর্থ হয়। এই ক্ষোভেই এ ঘটনা ঘটে।
এরই অংশ হিসেবে র্যাব-৪ হেমায়েতপুর থেকে মো. আকরাম (৬০) ও মুহাম্মদপুরের শ্যামলীর ২৪/১৪ খিলজী রোড থেকে ছেলে মো. ভাসানী ওরফে রাজুকে (৩০) গ্রেফতার করে।
তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের বাহেরচরে মো. হানিফের বাড়ি থেকে হত্যার ঘটনায় মিলনের ব্যবহৃত ০৫টি মোবাইল, ৭টি সিম ও নগদ ২ হাজার ৭২০ টাকা তার মা ও বোনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, মিন্টু ও মিলনের পরিকল্পনায় আকরাম, রমজান, হানিফ, ভাসানীসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন এ কাজে সহায়তা করে। তারা মানিককে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর তারা শিশু মানিকের লাশের চোখ উপড়ে ফেলে, হাতের আঙ্গুল কেটে ফেলে, পেট কেটে নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে ফেলে। লাশ ধীরে ধীরে পচে দুর্গন্ধ হওয়ায় তারা মানিকের লাশ ফেলে আসে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
জেইউ/এসএইচএস/এমআরআই