‘সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে’
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, মানবিক উন্নয়ন সূচকে টেকসই ক্রমোন্নতিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।
জাতিসংঘ সামাজিক উন্নয়ন কমিশনের চলমান ৫৭তম অধিবেশনে দেয়া বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গতিশীল নেতৃত্বে বৈষম্য দূর করার মাধ্যমে একটি একীভূত, ন্যায়সঙ্গত ও পক্ষপাত মুক্ত সমাজ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এই পদক্ষেপগুলো অন্যতম হলো- দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তা সহজলভ্য করা এবং সকলের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা।’
সরকার গৃহীত ও বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের নীতি হচ্ছে- ‘সমগ্র সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি’ গ্রহণ, যাতে কেউ পেছনে পড়ে না থাকে, সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন। নারী ও যুবদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান যাতে তারা দেশের মূল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে পারে। বয়স্ক, বিধবা ও নির্ভরশীল পিতামাতাকে সম-পরিচর্যা সুবিধা প্রদান, জাতীয়ভাবে পরিবার-কেন্দ্রিক নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন ও শক্তিশালীকরণ, জ্ঞান ও কর্মদক্ষতাকে রূপকল্প-২০২১ এর মূল চালিকা শক্তি নির্ধারণ, ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে সকলের- বিশেষ করে নারীদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত, নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা এবং সকলক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা আনতে নারী ও পুরুষের কাজে সমমর্যাদা ও সম-মজুরি নিশ্চিত করা।
এলডিসি থেকে প্রথমবারেরমতো বাংলাদেশের উত্তরণ যোগ্যতা অর্জনের কথা তুলে ধরে দেশের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূচক ও পরিসংখ্যানও উল্লেখ করেন।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘আয়-প্রবৃদ্ধি সমুন্নত রাখতে আমরা সম্প্রতি তৈরি পোশাক খাতের সর্বনিম্ন মজুরি পরপর দুইবার রিভিউ করেছি। এ খাত দেশের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত, যেখানে ৮০ শতাংশ নারী কাজ করেন। যাদের সংখ্যা প্রায় ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন। জাতীয় জীবনে সকল ক্ষেত্রে পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নারীরা কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশ তার লিঙ্গ বৈষম্যের ৭২ শতাংশ হ্রাস করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সামাজিক উন্নয়ন কমিশনের সদস্য। গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ কমিশনের ৫৭তম অধিবেশন শুরু হয়েছে। যা আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
এমবিআর/এমএস