অভিযান সত্ত্বেও থামছে না গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার


প্রকাশিত: ০৪:২১ এএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হারে বেড়ে চলেছে অবৈধভাবে নেয়া গ্যাস সংযোগ। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের মাধ্যমে এ সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও রাতের আঁধারে ঠিকাদাররা আবারো গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন।

এতে করে একদিকে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি অবৈধভাবে নেয়া গ্যাস পাইপ লাইনের কারণে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের হুমকিতেও রয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ফির টাকা জমা দিয়ে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে আবাসিক গ্যাস সংযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও বছরের পর বছর অপেক্ষা করে নতুন গ্যাস সংযোগ পাচ্ছেন না সাধারণ গ্রাহকরা। আর এ সুযোগে এক শ্রেণির ঠিকাদার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করে আবাসিক গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। প্রতিটি গ্যাস সংযোগের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

আরো জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। আর এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছেন।

চলতি মাসের ৪ আগস্ট জেলার সরাইল উপজেলার নিজসরাইল গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে একটি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ১২ আগস্ট সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের কলামুড়ি ও হারিয়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২০০ ফুট অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইন অপসারণ ও ৮টি অবেধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর ১৮ আগস্ট আবারো সুহিলপুর ইউনিয়নের হারিয়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৩০০ ফুট পাইপ লাইন অপসারণ করে।

এদিকে, ২৫ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চন্ডালখিল গ্রামে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ফুট অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সর্বশেষ গত ২৬ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের সরকারপাড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৫টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি ৫ জনকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের সবগুলো অভিযানই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাব্বির আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে। অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে নেয়া গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা আর গাহকদের জরিমানা করা হলেও এখনো পর্যন্ত ধরা-ছোয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন ঠিকাদার আর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর ফলে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না গ্যাসের অবৈধ সংযোগ।

এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাব্বির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে ঠিকাদাররা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। আমরা সেগুলো অভিযান চালিয়ে অপসারণ করছি। কিন্তু অভিযানের কযেকদিন পরেই ঠিকাদাররা রাতের আঁধারে আবারো অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। এ সকল ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
"/জানতে চাইলে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (সেবা) প্রকৌশলী মো. আবু জাফর জাগো নিউজকে জানান, নতুন গ্যাস সংযোগের জন্য এক সঙ্গে অসংখ্য গ্রাহকের আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু আমরা সকলকে এখনই গ্যাস সংযোগ দিতে পারছি না। তাই এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ঠিকাদার গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে রাতের আঁধারে অবৈধবাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন।

তবে এ সকল ঘটনায় বাখরাবাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জড়িত থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, যদি বাখারাবাদের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকেন তাহলে নির্দিষ্ট করে তাদের নাম-পরিচয় বলুন, অবশ্যই তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আজিজুল আলম সঞ্চয়/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।