‘বিশৃঙ্খলা হলে তাবলিগের মুরুব্বিদেরই দায় নিতে হবে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিশ্ব ইজতেমায় আসা তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের বা তাদের কোনো গ্রুপের ভুলের কারণে যদি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে তার দায় তাদেরই নিতে হবে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তার বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তাবলিগের মুরুব্বি ও মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, যেভাবে সরকারের সঙ্গে আপনাদের আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেভাবেই সবাই নিয়ম মেনে চলবেন। প্রথম গ্রুপ ইজতেমা শেষে শান্তিপূর্ণভাবে প্রস্থান করবেন, পরে আরেক গ্রুপ প্রবেশ করবেন। আমরা আশা করবো ইজতেমার দায়িত্বশীলরা ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে রাষ্ট্র কিংবা ইসলামের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। কারও ব্যর্থতা বরদাশত করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, ইজতেমা নিয়ে গত এক বছরে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক আলাপ-আলোচনা এবং দেনদরবারের পর মতভেদ দূর হয়েছে। তাই এবারের ইজতেমায় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বেশি। প্রতি বছর ইজতেমা ঘিরে যে ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে এর সঙ্গে এবার বাড়তি কিছু যুক্ত হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে এবার সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ইজতেমা ঘিরে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তাই বলতে পারি, এই মহাসমাবেশকে শান্তিপূর্ণ করতে আমাদের প্রস্তুতি পর্যাপ্ত। কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই। ইজতেমা ময়দানের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী র‌্যাবের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের হেলিকপ্টার টহল থাকবে, মাঠে ড্রোন থাকবে। ইলেকট্রনিক ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে ময়দান সুইপিং করা হবে এবং ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুপক্ষের দ্বন্দ্বের সুযোগে কোনো তৃতীয় পক্ষ যেন সুযোগ নিতে পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সতর্ক থাকবো, তারপরও কেউ যদি এ ধরনের অপচেষ্টা করার চেষ্টা করে তাহলে আমরা তাদের সমূলে বিনষ্ট করতে সক্ষম হবো।

উল্লেখ্য, আগামীকাল শুক্রবার থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হতে যাচ্ছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে এবার ৫৪তম ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে ইজতেমা তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলেও এবার মুসল্লিদের মতভেদের কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয় তা চারদিন নির্ধারণ করেছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি ফজরের নামাজের পর থেকে আমবয়ানের মাধ্যমে প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন ঢাকার কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা যোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা। প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত হবে শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি)। আখেরি মোনাজাত শেষে যোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা শনিবার রাতের মধ্যেই ইজতেমা মাঠ ছেড়ে যাবেন।

এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি ফজরের নামাজের পর থেকে আমবয়ানের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর (ওয়াসিফুল ইসলামের) অনুসারীরা। এ পর্বের আখেরি মোনাজাত হবে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি)।

এফএইচএস/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।