‘ছোট দুর্নীতি অঙ্কুরেই বিনাশে বড় দুর্নীতির পথ সঙ্কুচিত হয়’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ছোট ছোট দুর্নীতি অঙ্কুরেই বিনাশ করা গেলে বড় বড় দুর্নীতির পথ সঙ্কুচিত হয়ে আসে। তা নাহলে ছোট ছোট দুর্নীতি একসময় দুর্নীতির মহীরূহে পরিণত হয়, যা সমাজকে বিপন্ন করে ফেলে এবং তা উপড়ে ফেলাও দুরূহ হয়ে পড়ে।

আজ বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্টেট অব কোর্টসের (স্ট্রেনথেনিং অব ল’ প্রোগ্রাম) টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রবার্ট লকারির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘বিদ্যমান আইন অনুসারে মানি লন্ডারিং মামলা পরিচালনার একক দায়িত্ব দুদকের নেই। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের সিআইডি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ একাধিক সংস্থা মানি লন্ডারিং মামলা পরিচালনা করছে। দুদক কেবল ঘুষ ও দুর্নীতিসম্পৃক্ত মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। বাকি ২৬টি সম্পৃক্ত অপরাধ সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত অন্যান্য সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এ সকল প্রতিষ্ঠানের মঞ্জুরি কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করা হয়নি।’

অর্থপাচার-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে শুধু সন্ত্রাসে অর্থায়ন হয় না বরং দেশের ক্যাপিটাল ফ্লোয়িংও হচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুদক চেয়ারম্যানকে জানান, তদন্ত এবং প্রসিকিউশন বিচারের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তদন্তকারীরা যে সকল সাক্ষ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহ করবেন, তার সাক্ষ্যমান বিবেচনা করে বিশ্লেষণ করবেন প্রসিকিউটররা। অর্থাৎ তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং বিচারক অপরাধ দমনে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। আর অপরাধ দমনে কার্যকর তদন্ত ও প্রসিকিউশনের প্রয়োজন রয়েছে।

এসময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কমিশনের তদন্ত ও প্রসিকিউশনের সক্ষমতা হয়তো এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। তবে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটরদের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

দুদকের স্থায়ী প্রসিকিউটর নেই জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘শুধু দুদক নয় সরকারের কোনো স্থায়ী প্রসিকিউটর নেই। তারপরও দুদক প্রসিকিউটরদের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কমিশন অনুমোদিত নীতিমালার আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’

এসময় দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং সংশ্লিষ্ট বিচারকদের প্রশিক্ষণের আহ্বান জানিয়ে প্রতিনিধি দলের উদ্দেশে বলেন, ‘শুধু যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে তা নয়, বরং আপনারা আপনাদের এসকল ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের বাংলাদেশে এনে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘কমিশনের কোনো আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন জ্ঞানের, যার মাধ্যমে আমরা পদ্ধতিগত উন্নয়ন ঘটাতে পারি। আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশি-বিদেশি জ্ঞানের মিশ্রণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত উন্নয়নের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করা যায় বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে দুদকের মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মো. মঈদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এমইউ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।