ধুলা দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি
ধুলা দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে শনিবার আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামসহ (নাসফ) সমমনা বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা মহানগরীতে ধুলা দূষণের প্রকোপ অত্যন্ত বেড়ে যায়। এ মৌসুমেই হাজার হাজার ইটভাটায় ইট প্রস্তুত ও পোড়ানোর পাশাপাশি মহানগরীতে অপরিকল্পিতভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ড্রেনেজ এবং রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় রাস্তা-ঘাট খোঁড়াখুঁড়ি বেড়ে যায়। মেট্রোরেলসহ অন্যান্য মেগাপ্রকল্পের জন্য রাস্তা ও আশপাশের বিশাল এলাকা জুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি, গ্যাস-পানি, বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, মাটি, বালি, ইটসহ নির্মাণসামগ্রী ট্রাকে করে শহরে পরিবহন করা, ড্রেন পরিষ্কার করে রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা, দোকানপাট ও গৃহস্থালীর আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে রাখা, মেরামতহীন ভাঙাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল, পাকা ভবন নির্মাণের সময় মাটি, বালু, ইটসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী রাস্তা-ফুটপাতে ফেলে রাখা, পুরাতন ভবন ভাঙা, মেশিনে ইট ভাঙা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ধোঁয়া ইত্যাদি ধুলা দূষণের অন্যতম উৎস।
এসব উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ ধুলা বাতাসে মিশে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, খোঁড়াখুঁড়ির মাটি ও অন্যান্য আবর্জনা দ্রুত অপসারণের জন্য পৃথক খাতে খরচ হয়। কিন্তু বিধি মোতাবেক কাজটি হয় না। এ ছাড়াও ড্রেনের ময়লা আবর্জনা রাস্তার দু’পাশে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। ফলে যানবাহন চলাচলের সময় ধুলাবালি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় শীতকালে ধুলা দূষণের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। ধুলা দূষণে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানী, এলার্জি, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ধুলা দূষণে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি একদিকে যেমন স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে তেমনি আর্থিক ও পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় অবিলম্বে ধুলা দূষণ বন্ধে চাই জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ। সেই সঙ্গে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহেমদ উজ্জ্বল, সামাজিক আন্দোলন সংস্থার চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির ভূইঞা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের এএন এম মাসুম বিল্লাহ, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের আমির হাসান মামুদ, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির মানবেন্দ্র দেব, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি মো. নাজিমউদ্দীন, নাসফের সহ-সম্পাদক মো. সেলিম, ক্যামেলিয়া চৌধুরী, মো. ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
এএস/এনডিএস/আরআইপি